বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চুরি ও ছিনতাইয়ের মত ঘটনা বেড়েছে। রোগী ও স্বজনদের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল, দামি গয়নাসহ নানা মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। এতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগী ও হাসপাতালের সংশ্লিষ্টরা।

এদিকে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল ঘুরে রোগী ও তার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে নানা বয়সী  শত শত রোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসেন। দীর্ঘ লাইন পড়ে চিকিৎসকদের রুমের সামনে। রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ে অনেকে ক্লান্ত হয়ে পড়েন। এরই সুযোগে একটি চক্র নারীদের ব্যাগ থেকে টাকা, মোবাইল, দামি গয়নাসহ নানা মূল্যবান সামগ্রী হাতিয়ে নেয়। এদিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের অক্সিজেন মিটার ও নার্সদের মোবাইলসহ নানা সামগ্রীও চুরির ঘটনা ঘটছে। বাদ যাচ্ছে না ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনরাও।

হাসপাতালে ভর্তি রোগী সালমা বেগমের মা সায়লা বেগম বলেন, হাসপাতালে ভর্তি মেয়ের জন্য ওষুধ নিতে যাওয়ার সময় এক নারী আমার বোরকার পকেট থেকে ২০০০ হাজার টাকা নিয়ে আরেকজনের হাতে দেন। এ সময় তাকে ধরে ফেললে তিনি অস্বীকার করেন। এই হাসপাতালে আমাদের কোনো নিরাপত্তা নেই।

লুনা নামে এক নারী তার সন্তানকে নিয়ে ডাক্তারের চেম্বারের সামনে লাইনে দাঁড়িয়েছেন। সেখানে থাকা অবস্থাতেই তার ব্যাগ থেকে ৫ হাজার ৩০০ টাকা চুরি হয়। লুনা বেগম বলেন, চিকিৎসা নিতে এসে এভাবে যদি টাকা খোয়া যায়, তাহলে কোথায় যাব, বাড়ি ফেরার জন্য ভ্যান ভাড়াটাও নেই।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা শেখ বাদশা বলেন, চোরেরা মূলত চিকিৎসা নিতে আসা নারীদের টার্গেট করে। বিভিন্ন সময়ে সেবা নিতে এসে শুধু এই হাসপাতাল থেকেই অর্ধশতাধিক নারীর স্বর্ণের চেইন ও মোবাইল খোয়া গেছে। এছাড়া হাসপাতাল প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও তারা প্রতিনিয়তই বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে দিন দিন চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা আরও বাড়ছে।

বাগেরহাট জেলা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মোজাফফর হোসেন বলেন, প্রায়ই হাসপাতালে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। রোগীদের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে একটি চোর চক্র টাকা ও মোবাইল হাতিয়ে নেয়। আমরা মাঝেমধ্যে চোরদের ধরে পুলিশে দেই। কিন্তু নিরাপত্তাকর্মী না থাকায় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দ্রুত নিরাপত্তাকর্মী নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।

বাগেরহাট জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার সমাদ্দার বলেন, হাসপাতালে যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও হাসপাতালের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করে রোগীর স্বজন বা আত্মীয় পরিচয় দিয়ে দুর্বৃত্তরা এসব অপকর্ম করে যাচ্ছে। চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনদের এ ব্যাপারে বার বার সতর্কতা করা হচ্ছে।

বাগেরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, হাসপাতালে চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনার খবর আমরা জানতে পেরেছি। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

আবু তালেব/এফআরএস