গাইবান্ধার তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ল্যাব সহকারী মিজানুর রহমান সবুজের সেই বিলাসবহুল পাঁচ তলা ভবন অপসারণে নোটিশ দিয়েছে গাইবান্ধা পৌর প্রশাসন। একই সঙ্গে পূর্বের নোটিশ আমলে না নেওয়ার সন্তোষজনক কারণ আগামী ১০ দিনের মধ্যেই জানাতে বলা হয়েছে।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেলে গাইবান্ধা পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন স্বাক্ষরিত ‘অনুমোদনবিহীন নকশার বর্ধিতাংশ অপসারণ এবং পৌরসভার নির্দেশনা অমান্যে জবাব দাখিল সংক্রান্ত’ একটি পত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর আগে, গত ২৮ অক্টোবর ৫ তলা ভবনের মালিক তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী, আয়ের উৎস নিয়ে প্রশ্ন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে দেশের জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যম ঢাকা পোস্ট।

অনুমোদনবিহীন নকশার বর্ধিতাংশ অপসারণ-সংক্রান্ত নোটিশে বলা হয়, ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর পৌরসভা হতে অনুমোদনকৃত নকশার বহির্ভূত অংশ অপসারণ করার জন্য আপনাকে একটি নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু আপনি অদ্যাবধি বহির্ভূত অংশ অপসারণ করেন নাই। এ ছাড়া আপনি পৌরসভার নির্দেশনা অমান্য/অগ্রাহ্য করেছেন। যা স্থানীয় সরকার আইন (পৌরসভা)-২০০৯-এর দ্বিতীয় তফসিলের ৩৬নং ও ৩৭নং অনুচ্ছেদ এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬-এর পরিপন্থি।

এ ছাড়া নোটিশে আরও বলা হয়েছে, পত্র প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ভবনের অনুমোদনবিহীন নকশার বহির্ভূত অংশ অপসারণ করে ইতিপূর্বে জারিকৃত পত্রের নির্দেশনা অমান্য করার সন্তোষজনক লিখিত জবাব দাখিলের জন্যও বলা হয়।

অন্যথায় স্থানীয় সরকার আইন (পৌরসভা)-২০০৯-এর দ্বিতীয় তফসিলের ৩৭নং অনুচ্ছেদ ও ১১৭ ধারা এবং ইমারত নির্মাণ বিধিমালা-১৯৯৬ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে মর্মেও নোটিশে অবগত করা হয়।

উল্লেখ্য, মিজানুর রহমান সবুজ গাইবান্ধা পৌরসভার থানা পাড়ায় (৪ নম্বর ওয়ার্ডের গোবিন্দপুর মৌজার (জেএল নং ৯৯) পাঁচ শতাংশ জমির ওপর ভবন নির্মাণের আবেদন করলে আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের ১২ জুন ভবন নির্মাণ আইন ১৯৫২-৫৩ এর ধারা (৩) অনুযায়ী তিন তলা আবাসিক (পাকা) ভবনের অনুমোদন দেয় গাইবান্ধা পৌরসভা। কিন্তু সেখানে নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই তিন তলার ওপরে আরও দুই তলাসহ একইভাবে মোট পাঁচ তলা ভবন নির্মাণ করেন। যা পৌরসভার ভবন আইন লঙ্ঘন এবং অপরাধ।

পরে অনুমোদনকৃত নকশার বহির্ভূত ভবনের কাজ করায় একই বছরের ৭ নভেম্বর প্রথম দফায় ওই ভবনের ‘নকশা বহির্ভূত অংশ অপসারণে’ তৎকালীন মেয়র মতলুবর রহমান স্বাক্ষরিত একটি নোটিশ দেওয়া হয়।

কিন্তু পৌরসভার ওই নোটিশের কোনো তোয়াক্কাই করেননি ভবনের মালিক মিজানুর রহমান সবুজ।

অপরদিকে, পৌরসভার পক্ষ থেকে নোটিশ প্রদানের ১১ মাস পার হলেও আর কোনো ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে সংবাদ প্রকাশের পর অবশেষে ওই ভবন অপসারণে দ্বিতীয় দফায় আজ আবারও নোটিশ দিল পৌরসভা।

রিপন আকন্দ/এএমকে