আড়াই মাস ধরে অধ্যক্ষ অনুপস্থিত, স্থবির প্রশাসনিক কার্যক্রম
অভিভাবকহীন হয়ে পড়ায় প্রশাসনিক স্থবিরতা বিরাজ করছে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজে।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মো. এজাবুল হকের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের নির্যাতন, ইভটিজিং, র্যাগিং, সিন্ডিকেট গঠন করে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি বন্ধ ও তার বিচারের দাবিতে কলেজ প্রাঙ্গণে আন্দোলন করেন সাধারণ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিজ্ঞাপন
এই আন্দোলনের পর গত ১৮ আগস্ট থেকে কলেজে আসছেন না অধ্যক্ষ মো. এজাবুল হক। ফলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের এই বিদ্যাপীঠ অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে। আর রুটিনমাফিক কাজকর্মেও এক ধরনের স্থবিরতা বিরাজ করছে।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের শিক্ষর্থীরা ক্লাস চলাকালীন কলেজ মাঠে এলোমেলোভাবে বসে আছেন। কেউ কেউ আবার দু-একটি ক্লাস করে বাকি ক্লাস ফাঁকি দিয়ে চলে যাচ্ছেন।
এ ছাড়া আগামীকাল ‘শ্রী শ্রী শ্যামা পূজা’ উপলক্ষে সরকারি ছুটির অফিসিয়াল নোটিশটি অধ্যক্ষের স্বাক্ষর ছাড়াই অন্য একজন সিনিয়র শিক্ষকের স্বাক্ষরে ইস্যু করা হয়েছে।
বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, ১৮ আগস্টের পর থেকে অধ্যক্ষ স্যার কলেজে আসছেন না। আমাদের নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে না। এতে পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে।
আরেক শিক্ষার্থী সায়েম বলেন, প্রিন্সিপাল স্যার না থাকার কারণে ভালোভাবে ক্লাস হচ্ছে না।
কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. শাহজালাল উদ্দিন বলেন, প্রিন্সিপাল স্যার কলেজে না আসার কারণে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের প্রত্যয়নপত্র, পরীক্ষাসহ কলেজে মনিটরিং কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আসন্ন নভেম্বর মাসে ইন্টার ২য় বর্ষের টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কিন্তু প্রিন্সিপাল স্যার না থাকার কারণে এখনো রুটিন করা হয়নি এবং পরীক্ষা কমিটিও গঠন হয়নি।
বাংলা বিভাগের প্রভাষক জোনাব আলী বলেন, শিক্ষকদের নির্যাতন, ইভটিজিং, র্যাগিং, সিন্ডিকেট গঠন করে চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করার কারণে অধ্যক্ষে মো. এজাবুল হকের প্রশাসনিক বিচার চাই এবং কলেজের কার্যক্রম গতিশীলতার জন্য অন্য একজনকে দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
অধ্যক্ষ মো. এজাবুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এজন্য তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) (শিক্ষা ও আইসিটি, অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. নাকিব হাসান তরফদার বলেন, আমি এই জেলায় নতুন যোগ দিয়েছি। তাই কলেজটির বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়ে বিধি অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
মো. আশিক আলী/এএমকে