নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় ছাত্রশিবির ও ছাত্রদলের কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ইব্রাহিম মাসুম (২৭) নামের ছাত্রদলের এক নেতা গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন আরও ছয়জন। ছাত্রদলের আহত নেতাকে নোয়াখালীর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুর ১২টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত উপজেলার আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের মহেশপুর ও কাচিহাটা সর্দার দিঘির পাড় এলাকায় কয়েক দফায় পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) দুপুরের দিকে ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মহেশপুরে জামায়াতের সমর্থক মো. সোহেলকে (৪০) ছাত্রদলের একদল কর্মী মারধর করেন। এ ঘটনার পর বিকেলে শিবির কর্মী মো. রাশেদের ওপরও হামলা চালান ছাত্রদলের কর্মীরা। এর জেরে শিবিরের একদল কর্মী ১নং ওয়ার্ডের কাঁচিহাটা সর্দার দিঘির পাড় এলাকায় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান। এ সময় কয়েকটি গুলির শব্দ শোনা যায়। এ ঘটনায় ছাত্রদলের ইউনিয়ন সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুম পায়ে গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে পাঁচজন আহত হন।

আমানউল্যাহপুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম মাসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, দুপুরের দিকে আমাদের এলাকার মো. সোহেলকে ইয়াবা সেবনকালে ছাত্রদলের কয়েকজন হাতেনাতে আটক করে। এ সময় এলাকার মুরব্বিরা তাকে হালকা মারধর করে তার পরিবারের কাছে সোপর্দ করেন। সোহেল একসময় আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতো। গত ৫ আগস্টের পর সে স্থানীয় জামায়াত-শিবিরের লোকজনের সঙ্গে চলাফেরা করে। যে কারণে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা তার পক্ষ হয়ে আজ সাড়ে ৭টার দিকে অতর্কিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়।

বেগমগঞ্জ উপজেলা জামায়াতের আমির আবু জাহের বলেন, ছাত্রদলের কর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে আমানউল্যাহপুরে আমাদের অনেক নেতাকর্মীকে মারধর করেছেন। মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) বিনা কারণে জামায়াতের সমর্থক মো. সোহেল ও শিবির কর্মী মো. রাশেদকে (২৪) মারধর করা হয়। হামলায় রাশেদ অচেতন হয়ে যান। আমাদের কর্মীরা যখন রাশেদের চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত, তখন তৃতীয় কোনো এক পক্ষ ছাত্রদলের নেতা মাসুমের ওপর হামলা করে। তবে তারা শিবিরের কিনা, আমি এখনও নিশ্চিত হতে পারিনি।

আমানউল্যাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের বিএনপি সমর্থক চেয়ারম্যান বাহারুল আলম সুমন  বলেন, দুপুরের দিকে ছাত্রদলের কর্মীরা মো. সোহেল নামের এক মাদকসেবী ও ব্যবসায়ীকে আটক করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। পরে সোহেলের পক্ষ হয়ে সন্ধ্যায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর অতর্কিত হামলা করে ও গুলি ছোড়ে। এতে ছাত্রদলের নেতা ইব্রাহিম মাসুম বাঁ পায়ে গুলিবিদ্ধসহ চার-পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হন। তারা ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসাও উদ্ধার করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমানউল্যাহপুর ইউনিয়নের কাঁচিহাটা বাজারে দুর্বৃত্তদের হামলায় ছাত্রদলের একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শুনেছি। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দিলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

হাসিব আল আমিন/আরকে