নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে মা-মেয়েকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ৬ জনকে আসামি করে মামলা রুজু করা হয়েছে।

রোববার (২৭ অক্টোবর) ভুক্তভোগী মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মা (৩৫) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিকেলে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার ২ জনকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তারা হলেন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চর এলাহী ইউনিয়নের চরবালুয়া গ্রামের হানিফ চৌকিদারের ছেলে মো. হারুন (৪০) ও একই গ্রামের বেলায়েত হোসেনের ছেলে মো. হাসান (৩৮)।

জানা যায়, গত ২০ অক্টোবর রাতে উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের দুর্গম চরে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাটি ঘটার পর স্থানীয় সমাজপতিদের কাছে বিচার চেয়ে পাননি ভুক্তভোগীরা। পরে বাধ্য হয়ে তারা ২৬ অক্টোবর বিকেলে স্থানীয় চর বালুয়া পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করেন। তারপর দুই আসামি হাসান ও হারুনকে আটক করে থানায় পাঠানো হয়।

মামলার আসামিরা হলেন, চরএলাহী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মো. ইব্রাহিম (৪৫), চরএলাহী ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. সাইফুল ইসলাম (৩৫), মো. রাজিব প্রকাশ রাজু (৩০), ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চরবালুয়া গ্রামের মো. রাসেদ (৩৫), মো. হারুন (৪০) ও মো. হাসান (৪০)। এরমধ্যে আসামি মো. হারুন ও মো. হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আসামিরা সবাই যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।

মামলায় বাদী অভিযোগে উল্লেখ করেন, আমার স্বামী চট্টগ্রামের কাভার্ডভ্যান চালক। গত ২১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইব্রাহিমের নেতৃত্বে আসামিরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে। এ সময় আমি ও ঘরে থাকা ফুফাতো দেবরকে (২২) তারা মারতে থাকেন এবং বলেন তোদের মধ্যে অবৈধ সম্পর্ক আছে। টাকা দিবি না হলে গ্রামে বদনাম রটিয়ে দেব সালিশ বসাব। এক পর্যায়ে নিরুপায় হয়ে ঘরে থাকা মেয়ের বিবাহ বিচ্ছেদের ৭০ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেই।

বাদী অভিযোগে আরও বলেন, টাকা পেয়ে আসমি রাসেদ, ইব্রাহিম ও রাজু আমার মেয়েকে (১৭) তুলে নিয়ে রান্নাঘরের পেছনে খালি জায়গায় ধর্ষণ করে। এতে বাধা দেওয়ায় আমার দেবরকে বেদম মারধর করা হয়। পরে আসামি সাইফুল ও ইব্রাহিম আমাকে পুকুরপাড়ে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় হাসান ও হারুনকে আমার দেবরের কাছে পাহারা বসায়। পরে রাত ৩টার দিকে মামলা করলে হত্যা হুমকি দিয়ে আসামিরা চলে যায়।

ভুক্তভোগী নারী বলেন, দুর্গম চরবালুয়া এলাকা এ আসামিদের নিয়ন্ত্রণে। তাদের ভয়ে আমরা ঘটনার পর গত কয়েকদিন ঘর থেকে বের হতে পারিনি। আশপাশের সমাজপতিদের কাছে সাহার্য চেয়েও পাইনি। পরে শনিবার গোপনে চরবালুয়া সমিতি বাজারে পুলিশ ক্যাম্পে গিয়ে মৌখিক অভিযোগ করি। পুলিশ দুই আসামিকে আটক করে আমাদেরসহ কোম্পানীগঞ্জ থানায় পাঠালে মামলা দায়ের করি। আমি এ ঘটনার কঠিন বিচার চাই।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম ঢাকা পোস্টকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী মা-মেয়েকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক আসামিদের আদালতে পাঠালে কারাগারে পাঠানো নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

এসএম