কুড়িগ্রামে গবাদিপশুর গো-খাদ্যের অর্থনৈতিক চাপ কমাতে সড়কের দুপাশে নেপিয়ার জাতের ঘাস চাষ করেছে অনেকে। ফলে একদিকে কমে আসছে গো-খাদ্য হিসেবে ফিডের নির্ভরতা, অন্যদিকে কমেছে খামারিদের গরু লালন-পালনের খরচও। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শে পরিত্যক্ত ও নিচু জমির পাশাপাশি বিভিন্ন সড়কের দুধারে উন্নত জাতের ঘাস চাষ করছে খামারিরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিভিন্ন সড়কের ৫৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দু’পাশে লাগানো হয়েছে নেপিয়ার জাতের ঘাস। এতে সড়কে শোভা বর্ধনের পাশাপাশি লাভবান হচ্ছেন গরুর খামারিরা। পরিত্যক্ত ২৫৫ একর জমির পাশাপাশি সড়কে লাগানো এসব ঘাস খুব বেশি যত্ন ছাড়াই বেড়ে উঠছে তাড়াতাড়ি। এই ঘাস গরুকে খাওয়ানোর পর আবারও গোড়া থেকেই গজায় 

রাজারহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ জানায়, জেলার ৯ উপজেলার মধ্যে শুধু রাজারহাট উপজেলায় ১ হাজার ৭৬টি খামারে গরুর সংখ্যা প্রায় লক্ষাধিক। যা অন্যান্য উপজেলার তুলনায় অনেক বেশি।

রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশা ইউনিয়নের খামারি জামসেদ আলী বলেন, আমার ১৭টি গাভী আছে। আমি রাস্তার দু'ধারে ঘাস লাগিয়েছি। সেই ঘাস গরুকে খাওয়াই। এর কারণে আমার ফিডের প্রয়োজন খুব কম। এছাড়া পতিত জমিতে ঘাস লাগাইছি। এসব গরুর দুধ বিক্রি করে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ পরিবার চলছে। ফিড কিনে খাওয়ালে তো এতো কিছু করা যেতো না। 

একই এলাকার কৃষক ছামাদ আলী বলেন, বর্তমান বাজারে দানাদার খাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই আমি ঘাষ চাষ করেছি। অনেকগুলো গরু পালন করছি। এই ঘাষ গরুকে খাওয়ার কারনে আমি অনেক উপকৃত হচ্ছি।

রাজারহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহফুজার রহমান বলেন, গবাদিপশুর উৎপাদন খরচের ৭৫ ভাগ খরচ হয় খাদ্য খরচে। ঘাস জাতীয়  কিন্তু গবাদিপশুর প্রধান খাদ্য। 

তাই গো-খাদ্যের অর্থনৈতিক চাপ কমানো ও গবাদি পশুর প্রাকৃতির পুষ্টি বাড়াতে সড়কে নেপিয়ার, জারা ও নিচু জমিতে জার্মান জাতের ঘাষ লাগাতে খামারিদের সব সময় পরামর্শ দিচ্ছি। 

জুয়েল রানা/আরকে