দাফনের দুই মাস ২১ দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত রিফাতের (১৪) মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য তার মরদেহটি কবর থেকে উত্তোলন করা হয়।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দুপুরে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের সুখীপুর নিজ গ্রামের কবরস্থান থেকে মরদেহটি উত্তোলন করে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ সময় দাউদকান্দি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) রেদোয়ান আহমদ এবং পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল।

দাউদকান্দি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জুনায়েদ চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নিহত রিফাত হোসেন উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের সুখীপুর গ্রামের মৃত হানিফ মিয়ার ছেলে। সে সুন্দুলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র ছিল। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৪ আগস্ট কুমিল্লার দাউদকান্দিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আন্দোলনে যোগ দেয় রিফাত। এ সময় তারা উপজেলার শহীনগর বাসস্ট্যান্ড এলাকা অবরোধ করলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। একপর্যায়ে গুলিবর্ষণ করে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয় রিফাত। তাকে প্রথমে গৌরীপুর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পর দিন ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিজ বাড়িতে তার মরদেহ দাফন করা হয়।

এ ঘটনার এক সপ্তাহ পর একই এলাকার রাজ্জাক ফকির বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৭০-৮০ জনের নামে থানায় একটি মামলা করেন। এর দুই সপ্তাহ পর নিহত রিফাতের মা নিপা আক্তার বাদী হয়ে ৩০-৩৫ জনের নামে আদালতে আরও একটি মামলা করেন। এসব মামলার বিষয়ে গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদালত রিফাতের মরদেহ উত্তোলন ও ময়নাতদন্তের নির্দেশ দেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার কুমিল্লা আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট নিহত রিফাতের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেন।

দাউদকান্দি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জুনায়েদ চৌধুরী বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় নিহত রিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয়। এ নিয়ে রাজ্জাক ফকির বাদী হয়ে থানায় এবং তার মা নিপা আক্তার বাদী হয়ে আদালতে দুটি মামলা করেন। আদালতের নির্দেশে রিফাতের মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

আরিফ আজগর/আরএআর