রাজবাড়ীতে সরকারি নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ইলিশের প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ শিকার করার অপরাধে নিষেধাজ্ঞার শুরু থেকে এ পর্যন্ত ১৪ দিনে মোট ১৩৬ জেলেকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং ৮৮৭ কেজি ইলিশ জব্দ করে এতিমখানায় দান করা হয়েছে।

শনিবার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে এ তথ্য জানান জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. মোস্তফা আল রাজীব।

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৩ অক্টোবর থেকে আজ ২৬ অক্টোবর নিষেধাজ্ঞার এই ১৪ দিনে জেলায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে মোট ১৩৬ জন জেলেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৭৮ হাজার ৪০০ টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই ১৪ দিন অভিযান চালিয়ে ইলিশ শিকারে ব্যবহিত অবৈধ ৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে ও ৮৮৭ কেজি ইলিশ মাছ জেলেদের কাছ থেকে জব্দ করে স্থানীয় এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।

শনিবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত জেলার পদ্মা নদীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর থেকে গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার অংশে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন ও জেলা মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় ৩৯ জেলেকে আটক করে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে ও কয়েকজন জেলেকে ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় ১ লাখ ২৮ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং জব্দকৃত ৫৩ কেজি ইলিশ মাছ এতিমখানায় দান করে দেওয়া হয়েছে।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ও সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোস্তফা আল রাজীব বলেন, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান উপলক্ষে পদ্মা নদীর পাংশা উপজেলার হাবাসপুর থেকে গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ঘাট পর্যন্ত ৫৭ কিলোমিটার অংশে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এদিন মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অবৈধভাবে ইলিশ শিকারের দায়ে ৩৯ জেলকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ সময় ১ লাখ ২৮ হাজার মিটার কারেন্ট জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়। এ ছাড়াও জব্দকৃত ৫৩ কেজি ইলিশ এতিমখানায় দান করা হয়। মৎস্য বিভাগের পক্ষ থেকে ইলিশ সম্পদ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।

রাজবাড়ী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাহিদ আহমেদ বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। জেলেরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে নদীতে মাছ শিকারে নামলেই আমরা অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের

নিয়মিত জেল, জরিমানারসহ জাল পুড়িয়ে ধ্বংস করে দিচ্ছি। আগামী ৩ নভেম্বর পর্যন্ত মা ইলিশ রক্ষায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এএমকে