ফরিদপুরে একটি হত্যা মামলায় জেল খেটে আট দিন আগে বের হয়েছেন মো. সোহেল মৃধা (৩৫)। বের হয়েই একটি ইজিবাইক ছিনতাই করার জন্য আবার জড়ান খুনে। পরে গ্রেপ্তার হন পুলিশের হাতে।

আজ শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এসব তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলন চাকমা।

সংবাদ সম্মেলনে শৈলন চাকমা বলেন, ফরিদপুরে গত ২৩ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হত্যার শিকার হওয়া ইজিবাইক চালক ফরিদপুর পৌরসভার উত্তর শোভারামপুর মহল্লার বাসিন্দা মৃত সাদিক ব্যাপারীর ছেলে মোশাররফ ব্যাপারীর মরদেহ আজ শুক্রবার ভোরে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ইজিবাইক ছিনতাই করতে শ্বাসরোধ করে চালককে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের অংশ নেন তিনজন।

তিনি আরও বলেন, গত বুধবার (২৩ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড় থেকে ফরিদপুর শহরের চর কমলাপুর মহল্লার বাসিন্দা মো. সোহেল মৃধা (৩৫) এবং শহরের উত্তর আলিপুর মহল্লার বাসিন্দা সাগর হোসেন (২৮) মোশারফের ইজিবাইকটি ভাড়া করেন ফরিদপুর সদরের কানাইপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কানাইপুরের ঝাউখালি এলাকা থেকে তারা অপর সঙ্গী চান্দু শেখকে (২২) তুলে নেন। পরে তারা মোশারফকে কানাইপুরের কোষাগোপালপুর বাজার এলাকায় একটি নির্জন আখক্ষেতে নিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ইজিবাইকটি নিয়ে যায়।

আসামি গ্রেপ্তার এবং মরদেহ উদ্ধারের ঘটনার প্রেক্ষাপটের বর্ণনা দিয়ে শৈলন চাকমা জানান, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ফরিদপুর সদরের তেতুলতলা এলাকায় একটি ইজিবাইক এলোমেলোভাবে ঘোরাফেরা করতে দেখে টহলরত পুলিশ। ওই সময় ওই ইজিবাইকে চালকসহ দুজন আরোহী ছিল। পুলিশ তাদের আটক করে প্রশ্ন করলে তারা এলোমেলো উত্তর দিলে পুলিশ ইজিবাইকসহ তাদের কোতয়ালি থানায় নিয়ে আসে। পরে নিহত ইজিবাইক চালক মোশারফের স্ত্রী সুমাইয়া বেগম কোতোয়ালি থানায় এসে গাড়িটি তার স্বামীর বলে শনাক্ত করেন। ওই সময় সোহেল মৃধা এবং চান্দুকে আটক করে পুলিশ। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী মোশারফ করিমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পুলিশ জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে শহরের আলিপুর এলাকা থেকে সাগর হোসেনকে আটক করা হয়। এই ঘটনায় আজ দুপুরে নিহত মোশারফের স্ত্রী সুমাইয়া বেগম বাদী হয়ে ওই তিনজনকে আসামি করে  ছিনতাই ও হত্যার অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন।

পুলিশ জানায়, সোহেল মৃধার নামে তিনটি হত্যাসহ সাতটি মামলা রয়েছে। তিনি গত ৮ দিন আগে একটি হত্যা মামলায় জেল খেটে বের হয়েছেন। অপরদিকে চান্দুর নামে একটি হত্যাসহ চারটি মামলা এবং সাগরের নামে চুরি, অপহরণ, মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসাসহ ছয়টি মামলা রয়েছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান জানান, আসামিদের সাত দিন করে রিমান্ডের আবেদন জানিয়ে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

জহির হোসেন/এমজেইউ