প্রচণ্ড বেগে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আছড়ে পড়েছে ঘূর্ণিঝড় দানা। বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঝড়ের প্রভাবে গত দুই দিন ধরেই নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকায় থেমে থেমে বৃষ্টি ও মৃদু হাওয়া চলছিল। তবে বৃষ্টি থেমে শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) সকাল থেকে ঝলমলে রোদের দেখা মিলেছে। এতে হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ পুনরায় চালু হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণিঝড় দানা প্রচণ্ড বেগে ভারতের ওড়িশা রাজ্যে আছড়ে পড়েছে। এর আগে, নোয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার আওতায় থাকায় ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত ছিল। ঘূর্ণিঝড় দানার কারণে উপকূলজুড়ে দমকা হাওয়াসহ থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে।

হাতিয়া উপজেলার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. সোহেল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোর থেকে পরিবেশ স্বাভাবিক। সূর্যের দেখা মেলায় সবাই খুব আনন্দিত। গত দুই দিন টানা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টির কারণে কোনো কাজ করা যায়নি। সবাই স্বাভাবিক কাজে নেমে পড়েছে। আল্লাহ আমাদের সহায় হয়েছেন বলে লাখো শুকরিয়া।

হাতিয়ার আফাজিয়া বাজারের বাসিন্দা মো. জুয়েল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আফাজিয়া বাজার হাতিয়ার বিখ্যাত বাণিজ্যকেন্দ্র। সকাল থেকে স্বাভাবিক হওয়ায় এখানে ব্যবসায়ীরা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বর্তমানে স্বাভাবিকভাবে সকল কাজ হচ্ছে। নদী উত্তাল নেই। সব কিছুই অনুকূলে রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় থেকে পরিত্রাণ পেয়েছে এই দ্বীপের অসহায় লাখো মানুষ। আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া।

চেয়ারম্যান ঘাটে টিকেট বিক্রির দায়িত্বে থাকা জামসেদ হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৪৮ ঘণ্টায় শত শত মানুষ কষ্ট করছে। তারা অনেকেই ঘাটে রাত কাটিয়েছে কিন্তু বাড়ির খবর জানতে দ্রুত নদী পারাপার হতে হবে। তাই প্রশাসনের অনুমতি পাওয়ার পর নৌ যোগাযোগ চালু করা হয়।

হাতিয়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিল্টন চাকমা ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিয়ার কোথাও কোনো ক্ষতি হয়নি। কোনো সতর্ক সংকেত না থাকায় হাতিয়ার সঙ্গে সারা দেশের নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হয়েছে। দ্বীপে যারা আটকা পড়েছেন তারা দ্বীপ থেকে বাইরে যেতে পারবেন এবং যারা দ্বীপে আসতে পারছিলেন না তারাও দ্বীপে আসতে পারবেন।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় আমাদের সকল প্রস্তুতি ছিল। সতর্কতার জন্য আমরা সরকারের সকল নির্দেশনা বাস্তবায়নে শতভাগ চেষ্টা করেছি। আল্লাহর রহমতে আমাদের নোয়াখালীর উপকূলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। সূর্যের দেখা মেলায় জনমনে স্বস্তি এসেছে। মানুষ তাদের স্বাভাবিক কাজ করছেন।

হাসিব আল আমিন/এএমকে