ঘূর্ণিঝড় দানা ভারতের ওপর আঘাত হানার কথা থাকলেও বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলে ব্যাপক প্রভাব দেখাচ্ছে। বরিশাল বিভাগের সবগুলো জেলায় সকাল থেকে টানা বৃষ্টি আর ঝোড়ো হাওয়া বইছে। সকাল থেকে বৃষ্টিতে অনেক এলাকা তলিয়ে গেছে। জেলা-উপজেলা শহরগুলোতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে। প্রতি ঘণ্টায় বাড়ছে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ, সেইসঙ্গে বাড়ছে নদ-নদীর পানির উচ্চতাও।

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে আবহাওয়া অফিস ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এই তথ্য পাওয়া গেছে।

বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের জলানুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম দুপুর ১২টায় এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন, কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমা থেকে ৫৭ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে। বিকেল ৩টার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন কীর্তনখোলা নদীর পানি বিপৎসীমা থেকে ৮৫ সেন্টিমিটার নিচে আছে। সন্ধ্যা ৬টার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে বিপৎসীমা থেকে ৪০ সেন্টিমিটার নিচে রয়েছে।

তিনি বলেন, বিভাগের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নদীর পানির উচ্চতা তুলনামূলক বেড়েছে। এরমধ্যে বিষখালী, মেঘনা, পায়রা, বুড়িশ্বর, বলেশ্বর, সন্ধ্যা, তেঁতুলিয়া অন্যতম।

বরিশাল আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানা বাংলাদেশের সমতলে আসার কোনো আশঙ্কা নেই। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বা শুক্রবার সকালে ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গে আঘাত হানতে পারে। দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে তিন নম্বর ও বরিশাল নদীবন্দরকে দুই নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। বিকেল ৩টা পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৬ মিলিমিটার পর্যন্ত। মাঝে মাঝে ঘণ্টায় ৪০-৪৫ নটিক্যাল মাইল গতিতে দমকা হওয়া বইছে।

সরেজমিনে বরিশাল শহর ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর প্রধান সড়ক থেকে বর্ধিত এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। টানা বৃষ্টির কারণে সদর রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, পলাশপুর, রসূলপুর, মোহাম্মদপুর, কাউনিয়া, প্যারারা রোড, রূপাতলী হাউজিং, কলেজ অ্যাভিনিউ, বটতলা এলাকায় যানবাহন ও মানুষ চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে।

কলেজ অ্যাভিনিউ এলাকার বাসিন্দা এলবার্ট বল্লভ রিপন বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই বাড়ির মধ্যে পানি চলে আসে। জলাবদ্ধতা এলাকার নিত্যদিনের ঘটনা। তাই স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা দূর করতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

বরিশাল নদীবন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, বেলা ১১টার দিকে সকল রুটের লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। নৌযানগুলোকে নিরাপদে নোঙর করে রাখার জন্য জানানো হয়েছে।

সৈয়দ মেহেদী হাসান/এএমকে