বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী ও পটুয়াখালীর কৃতিসন্তান হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার বড় বোন মিতু তরুয়াকে লাইব্রেরি এটেনডেন্ট পদে চাকরি দিয়েছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) কর্তৃপক্ষ। চাকরি পেয়ে সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শহীদের পরিবারের সদস্যরা। 

বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর দ. কাজী রফিকুল ইসলাম মিতু তরুয়া ও তার পরিবারের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন। এর আগে ২৯ সেপ্টেম্বর পবিপ্রবির ভিসি হৃদয় তরুয়ার পরিবারের খোঁজ খবর নিতে গিয়ে মিতু তরুয়াকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেন। 

মিতু তরুয়া বলেন, এই চাকরিটা মূলত আমার না আমার ভাইয়ের। আমি চেষ্টা করব আমার ভাইয়ের দায়িত্বগুলো পালন করার, বাবা-মা ও আমার পরিবারের খেয়াল রাখার। আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই আমাকে চাকরির সুযোগ প্রদানের জন্য। চাকরিটি আমার পরিবারের জন্য অত্যন্ত জরুরি ছিল।

শহীদ হৃদয় তরুয়ার বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া বলেন, আমার একমাত্র ছেলে ছাত্র জনতার আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে শহীদ হয়। আমাদের অসহায় পরিবারের দিকে তাকিয়ে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আমার মেয়েকে চাকরির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। আমার পরিবারের হাল ধরার জন্য এখন শুধু আমার মেয়েই আছে। এই মেয়েই আমার ভবিষ্যৎ, তাকে চাকরি দেওয়ায় আমরা সত্যিই অনেক উপকৃত হয়েছি।

 বিশ্ববিদ্যালয়ের উপচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ২৪ এর ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে এক শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর সৌভাগ্য পবিপ্রবি পরিবারের হয়েছে। নিহত হৃদয় তরুয়ার পরিবারের পাশে থাকতে পেরে আমরা গর্বিত। মিতু তরুয়ার চাকরির সমস্ত প্রক্রিয়া আজ সম্পন্ন করেছি। শহীদ পরিবারের পাশের থাকার দায়বদ্ধতা থেকে আমরা এই উদ্যোগটা নিয়েছি। আমি মনে করি সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদেরও ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের নিহত শহীদদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো উচিত।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এস এম হেমায়েত জাহান, ডিন কাউন্সিলের কনভেনার প্রফেসর ড. আতিকুর রমান, ছাত্র বিষয়ক উপ-উপদেষ্টা ড. এবিএম সাইফুল ইসলাম, প্রক্টর প্রফেসর আবুল বাসার খান, সাবেক ডিন প্রফেসর মো. জামাল হোসেন, প্রফেসর ড. খোকন হোসেন, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ড. মো. আমিনুল ইসলাম টিটু, প্রধান খামার তত্ত্বাবধায়ক আরিফুর রহমান নোমান উপস্থিত ছিলেন। 

এছাড়া হৃদয় তরুয়ার বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া, মা অর্চনা রানী ভগ্নিপতি দিপক মিস্ত্রি, ছাত্র প্রতিনিধি, শিক্ষক ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

রায়হান/আরকে