নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে মেহেরাজ হোসেন জিসান (৭) নামে এক মাদরাসাছাত্রকে হত্যা করে মুক্তিপণ দাবির মামলায় প্রতিবেশী দুই যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাদেরকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। 

বুধবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-১ এর বিচারক মো. আব্দুর রহিম এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে আসামিরা উপস্থিত ছিলেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে আব্দুর রহিম রনি ও শহিদুল্লাহর ছেলে মো. সালমান শিবলু। 

নিহত মেহেরাজ হোসেন জিসান বেগমগঞ্জ উপজেলার জিরতলী ইউনিয়নের দৌলতপুর গ্রামের প্রবাসী সোলেমান মিয়ার ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা যায়, শিশু মেহেরাজ হোসেন স্থানীয় মাদরাসার দ্বিতীয় জামায়াতের ছাত্র ছিল। ২০১৯ সালের ২১ মার্চ মাসে মাদরাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে আসামিরা সুকৌশলে খাবারের লোভ দেখিয়ে তাকে পার্শ্ববর্তী নোয়ান্নই ইউনিয়নের পরিত্যাক্ত বাড়িতে নিয়ে যায়। তারপর সেখানে জামাকাপড় দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে অর্ধমাটি চাপা দেন। তারপর  শিশুটির বাবা মায়ের কাছে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করেন। পরে এ ঘটনায় শিশুটির মা রুনা আক্তার বাদী হয়ে মামলা করলে পুলিশ শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে। দীর্ঘ ৫ বছর পর ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আসামিদের যাবজ্জীবনের পাশাপাশি এক লাখ টাকা করে জরিমানা করেছেন আদালত।

আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মামুনুর রশীদ লাভলু ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিদের স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তারপরও আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। বাদীপক্ষ রায়ে অসন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।

ভুক্তভোগীর নানা লোকমান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার নাতিকে তারা হত্যা করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অথচ তাদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। আমরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে মৃত্যুদণ্ড চেয়ে আপিল করব।

মামলার আসামিপক্ষের আইনজীবী মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালত আসামিদের কাউকে মুক্তিপণের বিষয়ে অভিযুক্ত করতে পারেননি। তবে সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে যাবজ্জীবন ও এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মূলত মামলায় কোনো আসামির নাম ছিল না। স্থানীয় ষড়যন্ত্রের কারণে আসামিদের অভিযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আসামিরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। তারাও উচ্চ আদালতে যাবেন।

হাসিব আল আমিন/আরএআর