নাটোর সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের সহযোগী রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে ১০ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে ব্যাপক নিরাপত্তার মধ্যে কোয়েলকে আদালতে হাজিরের পর অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. রওশন আলম তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। 

নাটোর জজ কোর্টের আইনজীবী হাফিজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন। রাশেদুল ইসলাম কোয়েলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা রিমান্ড আবেদন করলে পরবর্তী তারিখে রিমান্ড শুনানির কথা আদালত জানিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী।

গত ১১ অক্টোবর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় বিজিবির হাতে গ্রেপ্তার হন নাটোর সদরের চক বৈদ্যনাথ এলাকার আমিনুল ইসলামের ছেলে রাশেদুল ইসলাম কোয়েল (৩৭)। ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে নাটোরে ১০টি মামলায় আসামি করা হয় কোয়েলকে। ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন সময়ে জেলা বিএনপির সিনিয়র নেতাদের ওপর একাধিকবার কোয়েলের নেতৃত্বে হামলার ঘটনা ঘটে। 

এদিকে কোয়েলকে আদালতে হাজির করা নিয়ে সকাল থেকেই আদালতপাড়ায় ব্যাপক নিরাপত্তা জোরদার করতে দেখা যায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের। বিএনপি ও এর সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ আদালতের বিভিন্ন প্রান্তে অবস্থান নিয়ে কোয়েল ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। দুপুর ১টার দিকে আইনশৃঙ্খালা বাহিনী ও সেনা সদস্যদের ব্যাপক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে আদালতে হাজির করা হয় আসামি রাশেদুল ইসলাম কোয়েলকে। গাড়ি থেকে নামিয়ে আদালতে তোলার সময় নিরাপত্তা ভেদ করে ডিম, মানুষের মল ছোড়া হয় কোয়েলের মুখে। এ সময় বিএনপির নেতাকমীরা কোয়েলের ওপরে হামলার চেষ্টা করলে সেনা সদস্যদের বাধা দেয়। পরে কোর্টের সামনে তারা স্লোগান দিতে থাকে। এরপর আদালতে হাজিরা শেষে কঠোর নিরাপত্তায় কোয়েলকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

নাটোর সদর থানার ওসি মো. মাহবুর রহমান বলেন, আদালতে প্রাঙ্গণে কয়েক স্তরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা। 

নাটোর জেলা যুবদলের সভাপতি এম হাই তালুকদার ডালিম বলেন, আওয়ামী লীগের কুখ্যাত সন্ত্রাসী কোয়েল, যার হাতে নাটোর শহর রক্তে রজ্ঞিত হয়েছে। তাকে কোর্টে নিয়ে আসার কথা শুনেছি, এটা আইনি প্রক্রিয়া, আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ১৭ বছর পরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনের পর দেশের মানুষ আইন ফিরে পেয়েছে। সেই আইনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে আমরা কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেছি। আমাদের সিনিয়রদের নির্দেশে আমরা কোর্ট প্রাঙ্গণ ত্যাগ করছি। এদের ন্যায্য বিচার যেন আইন করে, সেই অপেক্ষায় রয়েছে নাটোরবাসী। 

গোলাম রাব্বানী/আরএআর