রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ এবং সন্ত্রাসীদের বিচার দাবিতে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) রাত পৌনে ১১টার দিকে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু করেন। মিছিলটি পার্ক মোড় হয়ে চকবাজার, সর্দারপাড়া, শহীদ আবু সাঈদ চত্বর হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে রাষ্ট্রপতির স্ববিরোধী বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে অবিলম্বে তার পদত্যাদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের হামলাসহ দেশব্যাপী সহিংসতার প্রতিবাদ জানানো হয়।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বেরোবির সমন্বয়ক রহমত আলী, এস এম আশিকুর রহমান, শামসুর রহমান সুমন, রংপুরের সমন্বয়ক রিফাত হাসান, আলী হোসাইন, সাজ্জাদ হোসেন, নাহিদ হাসান খন্দকার প্রমুখ।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি’ এ ধরনের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রপতি তার পদের বৈধতা হারিয়েছেন। তিনি আর রাষ্ট্রপতি থাকার এখতিয়ার রাখেন না। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনাকে পুনর্বাসনের জন্য তিনি ষড়যন্ত্র করছেন। আমাদের শহীদ ভাইদের রক্তের দাগ আমরা এখনো ভুলে যাইনি। শহীদ ভাইদের রক্তের ওপর আওয়ামী ফ্যাসিস্ট ও খুনি হাসিনার সময়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়া সাহাবুদ্দিনের এমন বক্তব্য ছাত্র-জনতা প্রত্যাখান করেছেন। আমরা অবিলম্বে রাষ্ট্রপতির পদত্যাগ চাই।

‘পদত্যাগ’ প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতির দুই ধরনের বক্তব্য স্ববিরোধী উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা বলেন, রাষ্ট্রপতিকে অপসারণ করে অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। কারণ রাষ্ট্রপতি সুকৌশলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বিতর্কিত করার মিশনে নেমেছেন। রাষ্ট্রপতি এই ধরনের বক্তব্যে গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। তাকে পদত্যাগ করতে হবে। যদি পদত্যাগ না করেন, তাহলে অবস্থা হবে ফ্যাসিবাদী হাসিনার মতো।

শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, রংপুর থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের স্পিরিট বেড়ে গিয়েছিল। সেই রংপুর থেকে সাহাবুদ্দিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনের স্পৃহা সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ, ছাত্রলীগের রাজনীতি থেকে আওয়ামী লীগ হয়ে রাষ্ট্রপতি হওয়া বিতর্কিত সাহাবুদ্দিন পদত্যাগ না করলে রাজপথের আন্দোলন থেকে আগামীতে কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।  

এর আগে বিক্ষোভ মিছিল থেকে শিক্ষার্থীদের ‘স্বৈরাচারের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘দফা এক দাবি এক, দালাল সাহাবুদ্দিনের পদত্যাগ’, ‘ছাত্রলীগ-যুবলীগের আস্তানা ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এফআরএস