চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাসপাড়া গ্রামে সাপের কামড়ে সেলিম হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (২১ অক্টোবর) ভোর আনুমানিক ৬টারি দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

নিহত সেলিম হোসেন চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়নের খাসপাড়া গ্রামের মৃত. মনির উদ্দিনের ছেলে। তিনি দুই সন্তানের জনক ছিলেন।

সেলিমের খালু রবিউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, রাতে সাপে কামড়ানোর পরই একটি মাইক্রোবাস ভাড়া করে সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় সেলিমকে। হাসপাতালে সরকারিভাবে সাপের বিষের প্রতিষেধক (অ্যান্টিভেনম) সাপ্লাই ছিল না। বাইরে থেকে অ্যান্টিভেনম কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়। অত্যন্ত দারিদ্র পরিবার তারা। সঙ্গে করে মাত্র ৭ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিল। আর এক ডোজ অ্যান্টিভেনমের (১০ পিচ) মূল্য ১৪ হাজার টাকা। ফার্মেসি দোকানদার বাকি দিতে না চাওয়ায় ভাড়া করা মাইক্রোবাসের চাবি বন্ধক রাখা হয়। এরপরই এক ডোজ অ্যান্টিভেনম আমাদের দেন তিনি। হাসপাতালে নিয়ে আসার প্রায় একঘণ্টা পর অ্যান্টিভেনম তার শরীরে পুশ করা হয়। এরপরও সেলিমকে বাঁচানো গেল না। যদি হাসপাতালে কিংবা ফার্মেসি থেকে তাৎক্ষণিক অ্যান্টিভেনম পাওয়া যেত তাহলে হয়তো সেলিমকে বাঁচানো সম্ভব হতো।

তিনি বলেন, রোববার রাতে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন। রাতে একটি বিষধর সাপ সেলিমের গলায় পেঁচিয়ে ধরে গলাতেই কামড় দেয়। এরপরই রাত ২টার দিকে সেলিমকে উদ্ধার করে মাইক্রোবাস ভাড়া করে সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

তিনি আরও বলেন, সেলিমের দুটি ছোট ছোট সন্তান রয়েছে। তার মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। সেলিমও দিনমজুর ছিলেন। তার মৃত্যুতে একটি পরিবারের স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের স্টোর কিপার হাদিউজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, প্রায় মাস খানেকের বেশি দিন যাবত হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম সাপ্লাই নেই। বেশ কয়েকবার ঢাকাতে যোগাযোগ করেছি। এখনো অ্যান্টিভেনম দেয়নি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. মোরশেদ আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাপের কামড়ে রাতে একজন যুবক সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়। অ্যান্টিভেনম পুশ করা হয়েছিল। পরে ভোর ৬টার দিকে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি  মারা যান।

আফজালুল হক/এএমকে