ফরিদপুরের ট্রাফিক পুলিশের ইন্সপেক্টর তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামে থাকা গোপালগঞ্জ শহরের চাঁদমারি এলাকায় ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের দেখভালের জন্য জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালককে রিসিভার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আদালত। 

গত ১৬ অক্টোবর এ দম্পতির নামে আয় বহির্ভূত সম্পদ ক্রোকের আবেদন করেন দুদকের ফরিদপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক ইমরান আকন। ওই দিনই তা মঞ্জুর করেন ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. জিয়া হায়দার। এতে গোপালগঞ্জ শহরে অবস্থিত ৬ তলা বাড়িটির রিসিভার হিসেবে জেলা দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-পরিচালক মশিউর রহমানকে নিয়োগ দেন আদালত।

সোমবার (২১ অক্টোবর) পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা দুদকের উপ-পরিচালক মশিউর রহমান নিজেই। 

তিনি বলেন, ফরিদপুর জেলা পুলিশের সাবেক ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) তুহিন লস্কর ও তার স্ত্রী জামিলা পারভীন কুমকুমের নামীয় গোপালগঞ্জ সদরের চাঁদমারি রোডে অবস্থিত ৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৬ তলা ভবনের রিসিভার নিয়োগের বিজ্ঞ আদালতের আদেশ পেয়েছি। আদেশ প্রাপ্ত হয়ে বাড়ির দখল বুঝে নেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। সরেজমিনে পরিদর্শন করে ৭ জন ভাড়াটিয়া থাকার তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে দ্রুতই  বিজ্ঞ আদালতকে অবহিত করা হবে।

জানা গেছে, তুহিন লস্করের নামে ঢাকার মিরপুর বিজয় রাকিন সিটি প্রজেক্টে অবস্থিত ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার একটি আধুনিক ফ্ল্যাট এবং স্ত্রী কুমকুমের নামে গোপালগঞ্জ জেলা সদরের চাঁদমারী এলাকার খাটরা মৌজায় ৬ কোটি টাকা মূল্যের ৬ তলা একটি আধুনিক বাড়ি রয়েছে, যা আয়কর বহির্ভূত সম্পদ।

এর আগে গত ৭ আগস্ট এ দম্পতির প্রায় ৪ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ ক্রোক করা হয়। এ নিয়ে এ দম্পতির প্রায় সাড়ে ১১ কোটি টাকার সম্পদ ক্রোক করা হয়।

এর বাইরে তুহিন ও জামিলার ব্যাংকে জমা ১ কোটি ৬ লাখ ১৭ হাজার ২৯১ টাকাসহ ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে। অবৈধ উপায়ে এসব সম্পদ অর্জন করা হয়েছে বলে দাবি দুদকের।

সম্পদ ক্রোকের বিষয়ে তুহিন লস্কর গণমাধ্যমকে বলেন, ঢাকায় আমার নামে কোনো ফ্ল্যাট নেই। গোপালগঞ্জের বাড়ি আগে ক্রোক করে আবার নতুন করে ক্রোক দেখানো হচ্ছে। বাড়ি নির্মাণের ব্যয় দুদক বেশি দেখাচ্ছে। এ ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নোটিশের নিষ্পত্তি না করে এসব করা হচ্ছে। আমার সব সম্পত্তি আয়করের আওতাধীন। এখানে জালজালিয়াতির কিছু নেই। তদন্ত করলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। মামলা না করে দুদকের সম্পদ জব্দের তৎপরতা হয়রানি ছাড়া আর কিছুই নয়।

অভিযুক্ত ট্রাফিক ইন্সপেক্টর তুহিন লস্কর ফরিদপুর জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত হলেও বর্তমানে প্রেষণে রংপুরে আছেন।

আরকে