বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল টার্গেট হওয়া উচিত। এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফলাফল করতে হবে। এরপর যে সেক্টরে যেতে চান, সে অনুযায়ী দেশের টপ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যাওয়া। তারপর ডিসিশন নেবেন আপনি কোন দিকে যাবেন। এজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আগে শিক্ষার্থীদের স্মার্টফোন ব্যবহার হতে বিরত থাকতে হবে। আমি নিজেও অনার্স ফার্স্ট ইয়ারে স্মার্টফোন নিয়েছি।

রোববার (২০ অক্টোবর) পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই ভালোভাবে পড়াশোনা করে একটি ভালো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন করতে হবে। হোক দেশের কিংবা দেশের বাইরের। একটি বিষয় মনে রাখবেন, আপনি যত ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবেন, তত বেশি প্ল্যাটফর্ম পাবেন নিজেকে বিকশিত করার জন্য।

শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদী হয়ে উঠার আহ্বান জানিয়ে সারজিস বলেন, যেখানে অন্যায়, সেখানেই প্রতিবাদ করুন। আগামী দিনে কেউ যদি ক্ষমতার অপব্যবহার করে, অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি করে এবং সুদ, ঘুষ ও মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকে তাহলে তার গঠনমূলক প্রতিবাদ করুন। সরাসরি না হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে করুন। এটি না করলে আবারও দেশে একই সংস্কৃতি তৈরি হবে।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবাদ করতে গিয়ে যদি আপনারা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হন পুরো বাংলাদেশে আপনাদের জন্য ফাইট করতে যা যা করা দরকার আমরা তা করব। তবে গুজবে কান দেওয়া যাবে না। বিগত ১৬ বছরে দেশের পরিস্থিতি নিয়ে, রাজনীতি ও প্রশাসন নিয়ে কথা বলতে অনেকবার ভাবতে হত। কিন্তু এখন এই দৃশ্য বদলেছে।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সারজিস বলেন, ক্লাস এইট, নাইন ও টেন হলো লাইনচ্যুত হওয়ার সময়। আপনি সোশ্যাল মিডিয়ার প্রভাবে লাইনচ্যুত হতে পারেন, ফ্রেন্ড সার্কেলের প্রভাবে লাইনচ্যুত হতে পারেন, আবার বিভিন্ন রিলেশনশিপের মাধ্যমেও লাইনচ্যুত হতে পারেন। এই যে সময়টা- এটা ম্যাচিউরড সময় না, একজন শিক্ষার্থীর ম্যাচিউরিটি আসে গ্রাজুয়েশন শেষ করার পর। কাজেই এই সময়ে আবেগের বশবর্তী হয়ে কোনো ডিসিশন নিলে হবে না।

তিনি আরও বলেন, পঞ্চগড় থেকে বাংলাদেশ পুলিশের প্রধান হয়েছেন, এটা বিরাট বিষয়। রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ডিআইজি পঞ্চগড়ের, এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আমাদের পঞ্চগড়ের। এগুলো আমাদের গর্ব। আপনারাও পড়ালেখা করে ভালো একটি জায়গায় যান- আশা করি পঞ্চগড়ের জন্য এবং দেশের জন্য গর্বের কারণ হবেন।

এ সময় সমন্বয়ক সারজিস আলম ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করে বলেন, এ আন্দোলনে শহীদের সংখ্যা দুই হাজারেরও বেশি। আহতের সংখ্যা প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার। আন্দোলনে অংশ নেওয়া কারও হাত নেই, কারও পা নেই। কেউ আর কখনো পৃথিবীর আলো দেখবে না। কেউ কোনোদিন আর হাঁটতে পারবে না।

এ সময় পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড়ের সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী, মোকাদ্দেসুর রহমান সান, সহকারী শিক্ষক আবু তালেব, গোলাম শামীম প্রমুখ। পরে তিনি পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিয়ম করেন।

এসকে দোয়েল/এমজেইউ