চাঁপাইনবাবগঞ্জে নুরুল ইসলাম বুলবুল
ফ্যাসিবাদের দোসরদের গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেছেন, বিগত সাড়ে ১৭ বছরে সবচেয়ে বেশি জুলুমের শিকার হয়েছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। আমাদের পাঁচজন শীর্ষ নেতাকে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে মিথ্যা মামলা দিয়ে। এছাড়া ছয়জন শীর্ষ নেতাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলের মধ্যে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঢেলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাঁচ শতাধিক নেতাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
রোববার (২০ অক্টোবর) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়ন জামায়াত আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বিজ্ঞাপন
নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, জামায়াতে ইসলামীর শহীদ নেতৃবৃন্দের সন্তানসহ অসংখ্য মানুষকে গুম ও খুন করা হয়েছে। আমাদের জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় অফিস থেকে শুরু করে সমস্ত অফিসগুলোকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০ হাজারেরও বেশি মিথ্যা মামলা করে লাখ লাখ নেতাকর্মীকে ঘরবাড়ি, ব্যবসা ও চাকরি ছাড়া করা হয়েছিল এবং তারা মানবেতর জীবনযাপন করেছিল।
জামায়াতের নিবন্ধন সম্পর্কে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য একদিকে আমাদের শীর্ষ নেতাদের হত্যা করা হলো অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীককে কেড়ে নেওয়া হলো। এমনকি গত জুলাই-আগস্টের চলমান আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ১ আগস্ট জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলো।
নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় জানিয়ে বুলবুল বলেন, নতুন বাংলাদেশের স্লোগান হচ্ছে আমরা দুর্নীতিমুক্ত, বৈষম্যমুক্ত, চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ চাই। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে কিন্তু ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো চক্রান্ত করছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরে সেক্টরে ফ্যাসিবাদ মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। ফ্যাসিবাদ কখনো আনসারের নামে আসে, কখনো অমুসলিম ভাইদের নামে আসে আবার কখনো সাকিবদের নামে এসে ফ্যাসিবাদের দোসররা রাস্তায় এসে জনগণের যে অর্জন, হাজারো শহীদদের যে অর্জন সে অর্জনকে নসাৎ করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে। হাজারো শহীদের জীবনের বিনিময়ে যে অর্জন সে অর্জনকে বিনিষ্ট করার কোনো চক্রান্ত এই দেশের জনগণ মেনে নেবে না। সরকারের কাছে আহ্বান জানাতে চাই অবিলম্বে ফ্যাসিবাদের দোসর যারা তাদেরকে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তা না হলে জনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়নের যে দায়িত্ব আপনারা নিয়েছেন সে দায়িত্ব আপনারা বাস্তবায়ন করতে পারবেন না, জনগণের স্বপ্ন ভঙ্গ হবে। সুতরাং ফ্যাসিবাদের দোসরদের বিরুদ্ধে এখনই পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।
তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ চলে গিয়েছে, কিন্তু দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ এবং টেন্ডারবাজরা যদি আবারও মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে চায় তাহলে শহীদদের স্বপ্ন ব্যর্থ হবে।
এ সময় জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বক্কর, জেলা সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক মুখলেসুর রহমান, সদর উপজেলা আমির হাফেজ আব্দুল আলীমসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আশিক আলী/আরএআর