জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলায় গরুর বাছুরকে কেন্দ্র করে মারধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফিরোজ হোসেন নামের একজনের মৃত্যুর ঘটনায় ১৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার (২০ অক্টোবর) দুপুরে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো. নুরুল ইসলাম এ রায় দেন।

সাজাপ্রাপ্তরা হলেন-জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার আমুনিয়াপাড়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলী মণ্ডলের ছেলে আজিজার রহমান, সাহেব আলীর ছেলে শাহাদুল ইসলাম, সাইদুল ইসলাম, মৃত শুকুর আলীর ছেলে মোজাম, মোসলেম, মোসলেমের ছেলে আমিনুর, আশমত উল্যাহর ছেলে আবুল কাশেম, মৃত সফাত উল্যাহর ছেলে আশত, মৃত সোলাইমানের ছেলে সেকেন্দার, সেকেন্দারের ছেলে শাহীন মোল্লা, ইয়াকুব আলীর ছেলে আকরাম আলী, মৃত আফরাফ আলীর স্ত্রী জিন্নাহ ও মৃত মেহের আলী মণ্ডলের ছেলে আব্দুস ছাত্তার। এদের মধ্যে আজিজার, আবুল কাশেম ও আকরাম পলাতক রয়েছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ৯ জুন ক্ষেতলাল উপজেলার আমুনিয়াপাড়ায় মনসুর আলী ফকিরের একটি গরুর বাছুর প্রতিবেশী মোজামের বাড়িতে গেলে মোজাম বাছুরটিকে বেধড়ক মারপিট করেন। সেদিন রাতে মনসুর বাছুরটিকে মারপিটের কারণ জিজ্ঞাসা করলে আসামিরা উত্তেজিত হয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মনসুর ও তার ছেলে ফিরোজের ওপর হামলা করে মারপিট করেন। আসামিদের মারপিটে বাবা-ছেলে গুরুতর আহত হলে স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন তাদের হাসপাতালে ভর্তি করান। মুনসুর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। আর ফিরোজকে ঢাকার বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৪ জুন মারা যান তিনি।

এ ঘটনায় মুনসুর আলী ফকির বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ক্ষেতলাল থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। দীর্ঘদিন পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে আজ আদালত এই রায় দেন।

মামলাটির রাষ্ট্রপক্ষে পরিচালনা করেন জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল, সহকারী সরকারি কৌঁসুলি খাজা সামছুল ইসলাম বুলবুল, গকুল চন্দ্র মন্ডল, আবু নাছিম মো. শামীমুল ইসলাম শামীম। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোস্তাফিজুর রহমান।

চম্পক কুমার/এমজেইউ