কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ায় আধ্যাত্মিক সাধক ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিন দিন ব্যাপী লালন মেলা চলছে। মেলার দ্বিতীয় দিনে ও রাতে লাখ লাখ ভক্ত-অনুসারী ও দর্শনার্থীদের ভিড় জমে। ভিড়ের মধ্যে অনেক দর্শনার্থীর মোবাইল চুরি হয়। লালন মেলায় মোবাইল চোর চক্রের এক সদস্যকে আটক করেছে র‍্যাব। তার কাছে থেকে ১৬টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। 

আটক শরীফ হোসেন (২৭) নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার বন্দর বাড়িপাড়া গ্রামের নুর হোসেনের ছেলে। চোর চক্রের অন্যান্য সদস্যরা পলাতক রয়েছে। তার সঙ্গে পাঁচজন সদস্য আছেন। মেলায় লাখো মানুষের অস্বাভাবিক ভিড়ের সুযোগে মোবাইল ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরির উদ্দেশ্যে লালন মেলায় এসেছিল তারা। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া র‌্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইলিয়াস খান।

লালন মেলার দ্বিতীয় দিনে ও রাতে আখড়াবাড়ি চত্বরে ও তার আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকার তিল পরিমাণ জায়গা ফাঁকা ছিল না। ভিড়ে ঠেলাঠেলি ধাক্কাধাক্কিতে চিড়ে চ্যাপ্টা অবস্থা মেলায় আসা মানুষের। আখড়াবাড়ি চত্বরের আশেপাশে প্রায় দুই কিলোমিটার সাধু, ভক্ত ও অনুসারীদের ভিড় নেগেই ছিল। লালন মেলা পরিণত হয়েছে লাখ লাখ মানুষের মিলন মেলায়। 

র‍্যাব জানিয়েছে, শুক্রবার ছিল লালন মেলার দ্বিতীয় দিন। মেলায় বিকেল থেকে মানুষের ঢল নামে। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যে চুরি হয় অনেকগুলো মোবাইল ফোন। বিকেল ৩টার দিকে ঝিনাইদহ থেকে মেলায় আসা আরমান আলী নামের এক যুবকের পকেট থেকে মোবাইল চুরি হয়। ট্র্যাকিং করে আরমান তার চুরি হওয়া মোবাইল ফোনটি কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেটের ডায়মন্ড হোটেলে আছে বলে জানতে পারেন। রাতে সেখানে পৌঁছে তিনি স্থানীয় লোকজন ও র‍্যাবের সহায়তায় শরীফের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেন। এ সময় শরীফের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হোটেল কক্ষের বিছানার নিচ থেকে আরও ১৬টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। টের পেয়ে শরীফের সঙ্গে থাকা তিনজন কৌশলে পালিয়ে যান। পরে র‍্যাব তাকে আটক করে। 

ডায়মন্ড হোটেলের পরিচালক উজ্জ্বল মোল্লা বলেন, লালন মেলায় বেড়াতে এসেছেন জানিয়ে গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কয়েকজন হোটেল ভাড়া নেন। গতকাল রাতে এক ব্যক্তি এসে দাবি করেন যে লালন মেলা থেকে তার মোবাইল ফোন হারিয়ে গেছে। ফোনটি যার কাছে, তিনি এই হোটেলের লোকেশনে আছেন। তখন হোটেল কর্তৃপক্ষ তাকে মোবাইল উদ্ধারে সহযোগিতা করেন।

উদ্ধার হওয়া মোবাইল ফোনের মালিক আরমান আলী বলেন, ফোনে লোকেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম চালু ছিল। এর সূত্র ধরেই ফোনটি ফিরে পেয়েছেন তিনি।

র‍্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ইলিয়াস খান জানান, শরীফরা একটি চক্রের মাধ্যমে কাজ করেন। দেশের যেখানেই জনসমাগম হয়, সেখানেই এই মোবাইল চোর চক্রের সদস্যরা যান। দামি দামি ফোন চুরি করেন। এই চক্রের এক সদস্যকে আটক করা হয়েছে। তাকে কুমারখালী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মাত্র দেড় ঘণ্টায় চক্রটির সদস্যরা ১৬টি মোবাইল ফোন চুরি করেন।

রাজু আহমেদ/আরএআর