ছবি- নিহত কামাল বেপারী

দীর্ঘদিন ধরে দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে কামাল বেপারী (৪৫) নামে একজনকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সকালে শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের কাজী কান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত অবস্থায় কামালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) নেওয়া হলে এদিন বিকেলে তার মৃত্যু হয়।

নিহত কামাল একই এলাকার কাজী কান্দি গ্রামের মৃত হোসেন বেপারীর ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজনগরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। এর মধ্যে কাজী কান্দি গ্রামের আলী হোসেন সরদারের সঙ্গে কামাল হোসেন বেপারীর দ্বন্দ্ব ছিল দীর্ঘদিনের। শুক্রবার সকালে কামাল বেপারীর স্ত্রী মাকসুদার সঙ্গে সাঁকো পারাপার নিয়ে তর্কবিতর্ক হয় আলী হোসেন সরদারের ভাই আয়নাল সরদারের স্ত্রী শিরিন বেগমের। এ ঘটনার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কামাল বেপারী আন্দারমানিক বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলী হোসেন সরদারের নেতৃত্বে তাকে জোরপূর্বক একটি ঘরের ভেতর নিয়ে যাওয়া হয়। এ সময় আলী হোসেন সরদার, আয়নাল সরদার, ইদ্রিস সরদার, রিয়াজ সরদার, হাসান সরদার, আমির হোসেন সরদার, মনির সরদার, আরিফ সরদারসহ অজ্ঞাত ১০-১২ জন কামালকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে চলে যান। এরপর স্থানীয় ও স্বজনদের সহযোগিতায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক কামাল হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনার পরে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

নিহত কামালের ভাই সুলতান বেপারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আলী হোসেন সরদার ও তার দলবলের সঙ্গে আমাদের বিরোধ ছিল। সকালে আয়নাল সরদার ও কামাল বেপারীর স্ত্রীর সঙ্গে সাঁকো পারাপার নিয়ে তর্ক হলে কামালকে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে যায় আলী হোসেন সরদারসহ তার লোকজন। কামালকে একটি ঘরের মধ্যে আটকিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন তারা। এরপর কামালকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যাকারীদের বিচার চাই।

ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য আলী হোসেন সরদারসহ তার লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কাউকে পাওয়া যায়নি।

বিষয়টি নিয়ে শরীয়তপুর পুলিশের সহকারী সুপার (নড়িয়া সার্কেল) আহসান হাবীব ঢাকা পোস্টকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনগরে কয়েকটি পক্ষেরই আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এরই জের ধরে দুই পক্ষের দুই নারীর তর্কবিতর্ককে কেন্দ্র করে কামাল বেপারী নামে একজনকে ধরে নিয়ে একটি ঘরের মধ্যে রেখে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়। পরবর্তীতে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে ঢাকায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় এখনো কেউ অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাইফ রুদাদ/এফআরএস