নেত্রকোণার বারহাট্টা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম (সহকারী মহাব্যবস্থাপক) মনির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে নেত্রকোণা জেলা পুলিশ। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে জেলা গোয়েন্দা ও থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে ঢাকা খিলক্ষেত থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোণার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, মনির হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা থাকায় গতকাল রাত ১০টার দিকে নেত্রকোণা শহরের মোক্তারপাড়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে খিলক্ষেত থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এর আগে গতকাল সকাল পৌনে ৯টার দিকে এজিএম মনির হোসেনকে সেনাবাহিনী আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর কিছুক্ষণ পর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জিএম (মহাব্যবস্থাপক) প্রকৌশলী মাসুম আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, বারহাট্টার এজিএম মনির হোসেনকে ঢাকার খিলক্ষেত থানায় দায়ের করা একটি মামলায় পুলিশ আটক করেছে বলে শুনেছি, তবে নিশ্চিত নই।

পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জানানোর পর তিনি বলেন, এটা যদি হয়ে থাকে তাহলে ঘটনা যা শুনেছি সেটা সত্য। আপনার কাছ থেকে আমি গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত হলাম। যেহেতু মামলা হয়েছে এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। আইন তার নিজ গতিতে চলবে।

এ বছরের শুরু থেকে আরইবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি একীভূতকরণ, অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবিতে পল্লী বিদ্যুতের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন করে আসছিলেন। আন্দোলনে জড়িত থাকায় গত বুধবার বারহাট্টা পল্লী বিদ্যুতের এজিএম মনির হোসেনসহ সারা দেশের ২০ জন কর্মকর্তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাদের বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ খাতকে অস্থিতিশীল, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের নির্দেশনার প্রতি অবজ্ঞা ও দপ্তর পরিপন্থি কাজের অভিযোগ আনা হয়।

গতকাল (১৭ অক্টোবর) পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ১০ জন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা এবং চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্তের প্রতিবাদে কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি পালন করেছিল নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রায় সাড়ে ৬০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী। এ ঘটনায় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে চেয়ারম্যানের অপসারণ ও মামলা প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দিয়েছিল ‘পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন’। এ সময় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ দিয়েছিলেন তারা। এতে করে নেত্রকোণা জেলায় সকাল সাড়ে ১০টা থেকে পল্লী বিদ্যুতের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়েছিলেন নেত্রকোণা পল্লী বিদ্যুতের প্রায় পাঁচ লাখ গ্রাহক।

এর আগে চলতি বছরের শুরুতে আরইবি-পবিস (পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি) একীভূতকরণসহ অভিন্ন চাকরিবিধি বাস্তবায়নসহ সব চুক্তিভিত্তিক কর্মচারীদের নিয়মিতকরণের দাবিতে তারা আন্দোলন শুরু করে। ওই সময় তারা মে মাসে পাঁচ দিন এবং জুলাই মাসে ১০ দিন কর্মবিরতি পালন করেছিল।

চয়ন দেবনাথ মুন্না/এমজেইউ