ফরিদপুরের বোয়ালমারীর পরমেশ্বরদী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর ও তার ভাই সিদ্দিক মাতুব্বরের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেছে পাশের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড় খারদিয়া গ্রামের বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পরমেশ্বরদী ইউনিয়নের ময়েনদিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সালথার বড় খারদিয়া গ্রামের সহস্রাধিক লোক এ হামলায় অংশ নেন। হামলাকারীরা ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মান্নান মাতুব্বর এবং তার তিন ছেলে হারেজ মাতুব্বর, মজ্নু মাতুব্বর ও মাসুদ মাতুব্বর এবং ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই ইউপি আওয়ামী লীগ সদস্য সিদ্দিক মাতুব্বরের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করে। পরে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে।

এরপর হামলাকারীরা সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে অবস্থিত চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বরের সমর্থক হাসেম মোল্লা, কালাম মোল্লা, ইব্রাহিম মোল্লা, জালাল মোল্লা ও হবি মোল্লার বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পূর্বশত্রুতার জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধে সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বারখাদিয়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চুর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। যদিও আবুল কালাম আজাদ বর্তমানে পলাতক রয়েছেন।

এ মামলার সাক্ষী ছিলেন পরমেশ্বরদী ইউপি চেয়ারম্যান মান্নান মাতুব্বর। তার সাক্ষ্যের ভিত্তিতে বাচ্চুর ফাঁসির রায় হয় বলে ধারনা করেন বাচ্চুর অনুসারীরা।

এ ছাড়া বিগত দিনে ময়েনদিয়া বাজারে মান্নান চেয়ারম্যান একক রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তিনি ইতিপূর্বে একটি হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি হয়েছেন। মূলত দীর্ঘদিনের এসব পুঞ্জীভূত ক্ষোভ থেকেই বিক্ষুব্ধ জনতা আজকের অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছেন বলে মনে করেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।

তবে হামলার সময় মান্নান মাতুব্বর এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পালিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ ঘটনায় এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আবুল কালাম আজাদ ওরফে বাচ্চুর ছেলে জিহাদ মিয়ার নেতৃত্বে এ হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। তবে জিহাদ মিয়ার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় এ অভিযোগের ব্যাপারে তার বক্তব্য জানা যায়নি।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মজিবুর রহমান বলেন, পরমেশরদী ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িসহ কয়েকটি বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছে বলে জানা যায়নি। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আজ বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি।

নগরকান্দা সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, মান্নান মাতুব্বর আবুল কালাম আজাদের মামলার সাক্ষী ছিলেন বলে জেনেছি। তবে এ হামলার পেছনে ওই ঘটনা কাজ করেছে বলে আমার মনে হয়নি। ময়েনদিয়া বাজার এ এলাকার একটি বড় বাজার। এ বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিয়েই আজকের ঝামেলা হয়েছে বলে ধারণা করছি।

জহির হোসেন/এএমকে