সাতক্ষীরা সদর সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয় থেকে জমির দলিলের ভলিউম বইয়ের পাঁচটি পাতা গায়েব হয়ে গেছে। এ ঘটনায় বুধবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১১টা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর চারজনকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন সদর সাব-রেজিস্ট্রার মো. রিপন মুন্সি।

এতে জড়িত থাকায় ধলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে ওইদিন দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে রেজিস্ট্রি অফিসের সামনে থেকে পুলিশ আটক করে।

আটককৃতরা হলেন—ধলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান গাজী শওকাত হোসেন ও তার ভাইপো ইয়াছিন আরাফাত (শাওন), স্ট্যাম্প ভেন্ডার এস এম শাহজাহান, রেজিস্ট্রি অফিসের নকলনবিশ অনল কৃষ্ণ রায়, কাজী আবুল বাশার।

জানা গেছে, ধলবারিয়া চেয়ারম্যান ও তার ভাইপো ইয়াছিন আরাফাতের আর্থিক প্রলোভনে আকৃষ্ট হয়ে স্ট্যাম্প ভেন্ডার এম এস শাহজাহান, নকলনবিশ অনল কৃষ্ণ রায় ও কাজী আবুল বাশার পারস্পরিক যোগসাজশের মাধ্যমে কালিগঞ্জ সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে রেজিস্ট্রিকৃত ৩০৭৭/১৯৯৩, ৪৫২০/১৯৯৩, ৪১১৫/১৯৯৪ ও ৩৭৬১/১৯৯৫ নং দলিলগুলোর জাল নকল সরবরাহ ও সংশ্লিষ্ট দলিলগুলোর লিপিবদ্ধকৃত বালামের পৃষ্ঠা ছেড়ার ঘটনার লিখিত স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।

সাতক্ষীরা সদর সাব রেজিস্ট্রার মো. রিপন মুন্সি বলেন, এক ভদ্রলোক এসএম শাহজাহানের কাছে আসেন চারটা নকল তুলতে, পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট বালামগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে দিতে বলেন। আমার অফিসের নকলনবিশ অনল কৃষ্ণ রায় সে কাজী আবুল বাসারকে দিয়ে নকলগুলো লিখিয়েছেন। তারপর অফিসের রেজিস্ট্রারে এন্ট্রি না করে আমার আগের এক অফিসার ও আমার সই জাল করে দিয়ে নকলগুলো তৈরি করে দেন। এটা আমি বেশ খানিক আগেই উদ্ধার করেছি।

তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত পাতাগুলোর ব্যাপারে এস এম শাহজাহান স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘পাতাগুলো আমার কাছে রয়েছে, আমি কাল ১২টার মধ্যে বের করে দেব। আমাকে অনেক রিকোয়েস্ট করেছিল।’ তখন আমি বললাম, আপনি যে আমার কাছে ১২ মধ্যে এনে দেবেন আপনাকে যে কাল আমি পাব, এর গ্যারান্টি কী। আপনি যদি এখনই আমার কাছে এনে দেন তাহলে আমি দেখব কি করতে পারি। কিন্তু আপনি আমাকে এই কথা বলে চলে যাবেন পরে দেবেন কি দেবেন না আপনার তো কোনো গ্যারান্টি নেই। আপনাকে যদি থাকতে হয় নিরাপদ হেফাজতে থাকতে হবে। সেইভাবে থানা থেকে পুলিশ এসেছে আমি অফিসিয়াল চিঠি দিয়েছি। মামলা করার জন্য আমার রেকর্ড কিপারকে পাঠিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, যখনই শুনেছি চেয়ারম্যান এই ঘটনায় জড়িত এবং চেয়ারম্যান আমার অফিসে আছে আমি তখনই থানায় কল করেছি, চেয়ারম্যান আমার অফিসে আছে। এরপর থানা থেকে পুলিশ এসে চেয়ারম্যানকে নিয়ে গেছে।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফি বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, রেজিস্ট্রি অফিসের ঘটনায় চেয়ারম্যানসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রেকর্ড করা হয়েছে।

ইব্রাহিম খলিল/এএমকে