দীর্ঘ ৫৬ দিন কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ডুবে থাকার পর ভেসে উঠেছে সিম্বল অব রাঙামাটি খ্যাত ঝুলন্ত সেতু।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সেতুর পাটাতন থেকে হ্রদের পানি নেমে গিয়ে সেটি দৃশ্যমান হতে শুরু করে। এতে অবসান হয়েছে পর্যটকদের হতাশার স্থানটি।

এদিন সরেজমিনে পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্স ঝুলন্ত সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, হ্রদের পানি সেতুর পাটাতন থেকে নেমে গিয়ে সেতুর নিচে ছুঁইছুঁই অবস্থায় আছে। সেতুতে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে চলাচল করার জন্য ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়েছে সেতুর পাটাতন। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাঙামাটিতে বৃষ্টিপাত না হওয়ার ফলে উজানের ঢল বন্ধ আছে। এতেই হ্রদের পানি কমে দৃশ্যমান হয়েছে সেতুটি।

চট্টগ্রাম থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক মো. জিয়াউল ইসলাম বলেন, আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছিলাম যে ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডুবে গেছে। তাই রাঙামাটি বেড়াতে আসার প্ল্যান বাতিল করেছিলাম। আজ বেড়াতে এসেছি, এসেই জানতে পেরেছি সেতু থেকে পানি নেমে গেছে। তাই সবার আগে ঝুলন্ত সেতুটি ঘুরে দেখলাম। সেতুর ওপর হাঁটতে পেরে ভালো লাগছে।

নরসিংদী থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক বিজয় কর বলেন, আমরা জানতাম ঝুলন্ত সেতু পানির নিচে আছে। কিন্তু আজ সকালে রাঙামাটি নেমেই জানতে পারলাম ব্রিজ থেকে পানি সরে গেছে। তাই আমরা সবাই ব্রিজে এসেছি। এখানে ঘুরা শেষ করে তারপর কাপ্তাই হ্রদ ভ্রমণে বের হবো। সেতুটি দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

রাঙামাটি ট্যুারিস্ট বোট মালিক সমিতির সহ-সভাপতি রমজান আলী বলেন, রাঙামাটিতে বেড়াতে আসা পর্যটকদের কাছে ঝুলন্ত সেতু প্রধান আকর্ষণ। তাই এতদিন বেড়াতে আসা পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুর আনন্দ উপভোগ না করে হতাশ হয়ে ফেরত যেতে হয়েছে। কিন্তু সৌভাগ্যক্রমে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়াতে আজ থেকে সেতু ভেসে উঠেছে। এখন থেকে পর্যটক সমাগম বাড়বে বলে আশা করছি।

রাঙামাটি পর্যটন ঘাটের ব্যবস্থাপক মো. ফখরুল ইসলাম, দীর্ঘদিন ডুবে থাকার পর আবারও ভেসে উঠেছে ঝুলন্ত সেতু। এটি আমাদের জন্য খুবই আনন্দের খবর। এতদিন পর্যটকদের ঝুলন্ত সেতুতে না উঠেই ফেরত যেতে হয়েছে। এবার থেকে আর কাউকে হতাশ হয়ে ফেরত যেতে হবে না।

তিনি আরও বলেন, ঝুলন্ত সেতুতে আমরা পর্যটকদের নির্বিঘ্নে চলাচলের জন্য মেরামত এবং ত্রুটিপূর্ণ অংশগুলো ঠিক করেছি। আশা করছি আগামীকাল বা পরশু থেকে সেতুটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ আগস্ট রাঙামাটি জেলায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উজান হতে নেমে আসা ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে যেতে শুরু করে ঝুলন্ত সেতু। এরপর দীর্ঘ ৫৬ দিন পানির নিচে থাকার পর ভেসে উঠেছে আইকন অব রাঙামাটি খ্যাত এই সেতুটি।

মিশু মল্লিক/এফআরএস