জয়পুরহাটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত শিক্ষার্থী নজিবুল সরকার বিশালের মরদেহ দাফনের ৭৩ দিন পর কবর থেকে তোলা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে আদালতের নির্দেশে পাঁচবিবির রতনপুর উত্তরপাড়া এলাকার কবরস্থান থেকে তার মরদেহ তোলা হয়।

নিহত বিশালের বাড়ি পাঁচবিবি উপজেলার ধরঞ্জী ইউনিয়নের রতনপুর গ্রামে। তিনি পাঁচবিবির বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইন্সটিটিউটের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। গত ৪ আগস্ট জয়পুরহাট জেলা শহরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। ওইদিন রাতেই তার মরদেহ দাফন করা হয়।

বিশালের মরদেহ উত্তোলনের সময় জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল বাইন, জেলা কারাগারের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ আলম শোভন, সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মিজানুর রহমান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলমসহ পুলিশ ও নিহত ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

নিহত বিশালের বাবা মজিদুল সরকার বলেন, ময়নাতদন্ত ছাড়া আমার ছেলের মরদেহ দাফন করা হয়েছিল। আমি চাই তার হত্যার সঠিক বিচার। এ জন্য লাশ উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছি।

বিশালের প্রতিবেশী বড় ভাই ওমর ফারুক বলেন, আমরা একসঙ্গে গিয়ে আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলাম। আন্দোলনের দিন টিয়ার গ্যাসের ধোয়াতে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। পরে শুনি বিশাল গুলিতে আহত হয়েছে। সেখান থেকে তাকে জয়পুরহাট হাসপাতাল নেওয়া হয়। চিকিৎসক তাকে বগুড়া রেফার করেন। বগুড়া নেওয়ার পথে বিশালের মৃত্যু হয়। ময়নাতদন্ত ছাড়ায় তার মরদেহ দাফন হয়েছিল। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই। কোনো সন্ত্রাসী বা পুলিশ-প্রশাসন এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে থাকলে তদন্ত সাপেক্ষে তার বিচার করা হোক।

জয়পুরহাট জেলা কারাগারের মেডিকেল অফিসার ডা. শাহ আলম শোভন বলেন, আদালতের নির্দেশে নজিবুল সরকার বিশালের মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। তার মরদেহ দাফনের প্রায় আড়াই মাস হয়ে গেছে। এখন হাড়, কিছু মাংস, চামড়া ও চুল পাওয়া গেছে। এগুলো ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে নেওয়া হবে। পরবর্তী কার্যক্রম আদালত নেবেন।

একই কথা জানিয়েছেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট উজ্জ্বল বাইন।

চম্পক কুমার/এফআরএস