ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেছেন, ৫ আগস্টের পর আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কমিটি গঠন ও বিলুপ্ত এগুলো সবই সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত। খুলনার কমিটিগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছিল, সে জন্য বিলুপ্ত করা হয়েছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে খুলনা জেলা, মহানগর, আশপাশে যেসব সুনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রত্যেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের সাংগঠনিক স্ট্রাকচারগুলো গড়ব। শিক্ষার্থীদের মতামতের বাইরে কোনো সাংগঠনিক স্ট্রাকচার হবে না।      

বুধবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

নাছির উদ্দীন নাছির আরও বলেন, যারা শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কাজ করেছে, ভবিষ্যতে কাজ করতে পারবে, গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে নিয়োজিত ছিল, যারা এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব ও দেশের মালিকানা এদেশের মানুষের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আন্দোলন করেছে এবং সর্বোপরি সাধারণ শিক্ষার্থীদের ইতিবাচক রাজনীতির ম্যান্ডেট যারা বুঝতে পারবে, তাদেরকে আগামী দিনের নেতৃত্বে নিয়ে আসার জন্য প্রস্তুত করছি।

তিনি বলেন, ১৫ থেকে ১৬ বছর ফ্যাসিবাদী যে রাষ্ট্র কায়েম হয়েছিল, সেই হাসিনার বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিশেষ নির্দেশনাগুলো মাঠপর্যায়ে শক্তিশালীভাবে যারা কাজ করেছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। খুলনা মহানগর ও জেলার নেতাকর্মীদের সঙ্গে আমরা দুই দফায় কথা বলেছি। সেখানে সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে যে নির্দেশনাগুলো রয়েছে, সেগুলো একেবারে তৃণমূলে যারা শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলন করেছে, তাদের সঙ্গে আমাদের রুদ্ধদ্বার আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রদলের পক্ষ থেকে ইতিবাচক রাজনীতির ধারণা সর্বমহলে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, সেই আলোচনাকে স্বাগত জানিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করছি। এর আগে রংপুর, বরিশাল, সিলেটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। এখন খুলনার শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছি। মেডিকেলের শিক্ষার্থীরা এদেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের অংশীদার। তাদের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যে ভাবনা সেই ভাবনাগুলো ছাত্রদলের সিদ্ধান্ত গ্রহণে ব্যাপক অংশীদার হবে বলে মনে করছি। অধ্যক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ৫ আগস্টের আগে যে ৩১ দফা দেওয়া হয়েছিল, সেই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের যদি কোনো ভাবনা থাকে সেটা নিয়ে আলোচনা করব।

নাছির বলেন, একুশ শতক উপযোগী রাজনীতি কীভাবে করা যায় এবং দখলদারিত্ব এবং লেজুরবৃত্তির রাজনীতির বিপরীতে শিক্ষার্থীবান্ধব রাজনীতির বিষয়ে সর্বমহলে যে আলোচনা হচ্ছে, সেই আলোচনাতে মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অংশীদার করতে চাই। এ জন্য তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে।  

তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের শতাধিক নেতাকর্মী শেখ হাসিনার হাতে হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়ে শহীদ হয়েছেন। এখনো নিহতের সংখ্যা বাড়ছে। আহত অনেকেই মারা যাচ্ছেন।  

নাছির বলেন, জুলাই-আগস্টে যে সকল ছাত্র-জনতা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ও যারা আহত হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসা হচ্ছে না। তাদের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের মনোযোগী হওয়া উচিত।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে, তাদের যেন সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হয়। এ বিষয়ে যেন আরও গভীর মনোযোগ দেওয়া হয় সেই দাবি জানাচ্ছি।  

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর