পাবনার সাঁথিয়ায় বৃদ্ধা মাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন একমাত্র সন্তান শাহ আলম। বৃদ্ধা ওই মা বাড়ির গেটের সামনে বসে শুধু চোখের পানি ফেলছেন।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামে। অভিযুক্ত ছেলে শাহ আলম উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের চকমধুপুর গ্রামের মৃত মোকছেদ আলমের ছেলে।

এ ঘটনার পর মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) বিকেলে ওই বৃদ্ধার মেয়ে মাহফুজা আক্তার বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানা পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ দায়ের করেছেন।

জানা যায়, বৃদ্ধা সাহিদা খাতুনের স্বামীর ভিটায় একটি ঘর আছে। অথচ ছেলে ও নাতিরা ওই বৃদ্ধাকে বাড়িতে উঠতে দিচ্ছে না। তিনি বিগত দিনে মেয়ে মাহফুজার বাসায় থাকতেন। মঙ্গলবার যখন তিনি নিজ বাসায় ফেরার চেষ্টা করেন তখন ছেলে ও নাতিরা তাকে মেরে বাড়ি থেকে বেড় করে দেন।

বৃদ্ধা সাহিদা খাতুন বলেন, ‘ছেলের বউ আর নাতিরা এর আগে আমাকে মেরে লাইনে ফেলে দিয়েছিল। আমার স্বামীর পেনশনের টাকা দিয়ে ওই ঘর করা। সে ঘরে আমার জায়গা নেই। এ বয়সে কি কেউ স্বামীর ভিটা ছাড়তে চায়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাবারে আজ সারাটা দিন নামাজ নাই গোসল নাই বাইরে বসে আছি। আমার ছেলে আমাকে বহুবার মেরেছে। এবার আমাকে মেরে ফেললেও আমি যাব না কোথাও।’

ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধার ছেলে শাহ আলম বলেন, ‘মা জমি মেয়েদের নামে লিখে দিয়েছেন, তিন তার মেয়ের বাড়িতে থাকবেন। আমার বাড়িতে তার জায়গা নাই।’

বৃদ্ধার মেয়ে মাহফুজা আক্তার বলেন, ‘আমার মাকে এর আগেও কয়েকবার বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছেন আমার ভাই। একাধিকবার মারধরও করেছেন। সেজন্য আমার বাড়িতে নিয়ে রাখতাম। গতকাল (মঙ্গলবার) যখন আমার বাড়ি থেকে নিজের বাড়িতে আসেন তখন মারধর করে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেন ভাই। এর চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। এ ঘটনার উপযুক্ত বিচার দাবি করেন তিনি।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই গাফ্ফার বলেন, তাৎক্ষণিক ওই বৃদ্ধাকে পার্শ্ববর্তী তার মেয়ের বাড়িতে উঠিয়ে দিয়েছি। সন্ধ্যায় তাদেরকে থানায় আসতে বলেছি।

সাঁথিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুর রহমান বলেন, বিষয়টি জানার পর তাৎক্ষণিক পুলিশ ফোর্স পাঠিয়েছিলাম। আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি অবগত হয়েছি। ওসি সাহেবের সঙ্গে কথা হয়েছে, ওনি ব্যবস্থা নেবেন। ওনার তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে, পারিবারিক কিছু ঝামেলা ছিল ঠিক করা হবে।

রাকিব হাসনাত/এএমকে