বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে অ্যাক্টিভ উপদেষ্টা হওয়ার দরকার ছিল স্বাস্থ্য উপদেষ্টারের। যে অফিসে বসে না থেকে হাসপাতালে অফিস করবে। যে হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে দৌড়ে বেড়াবে।’

মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) সকালে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থান আন্দোলনে আহত রোগীদের দেখতে সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্র (সিআরপি) পরিদর্শন শেষে এ পরামর্শ দেন তিনি।

পরিদর্শনের সময় তিনিসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলনে আহত রোগীরা কোথায় ও কী অবস্থায় রয়েছে এবং তাদের সুবিধা-অসুবিধা ও নানা অভিযোগের কথা শুনেছেন।

আহতদের পরিদর্শনের সময় সমন্বয়ক সারজিস আলম অভিযোগ করে বলেন, যেসব রোগীদের বেড প্যাড প্রয়োজন তাদের বেড প্যাডের পরিবর্তে সাধারণ পেপার দেওয়া হচ্ছে। যার ফলে ক্ষতস্থানে ইনফ্যাকশন হতে পারে। কারণে এই পেপার দোকানে কেজি দরে কিনে আনা জিনিস।

এ সময় তিনি আরও বলেন, এখানে নতুন বিল্ডিং আছে, সেগুলোর পরিবেশ ভালো। কিন্তু যেই বিল্ডিংগুলো কয়েক বছর আগের সেগুলোর বেশ কিছু কক্ষ পরিত্যক্ত করা হয়েছে। সেই রুমগুলোতেও রোগী রাখা হয়েছে। তারা বলেছে, এখানে রোগীর আধিক্য বেড়েছে বলে পরিত্যক্ত রুমে রাখা হয়েছে। কিন্তু এগুলো একটি গোডাউনের থেকে খারাপ। তাই সেখানে রোগী রাখা কোনো দিন যোক্তিক হতে পারে না। যেই রুমগুলো ভালো সেখানে আরও একটি বেড রাখার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

আহত রোগীদের অভিযোগে শুনে সারজিস আলম বলেন, রোগী ভালো হওয়ার জন্য ভালো একটি পরিবেশ দরকার। কিন্তু রোগী যদি স্বাভাবিক পরিবেশের থেকে খারাপ অবস্থায় থাকে, তবে ভালো হওয়া থেকে আরও খারাপ হবে। কিন্তু এখানে স্টাফরা রোগীর সঙ্গে অসদাচরণ করছে। একটা বেডশিট বা কাথা চেঞ্জ ও ক্যাথেটার লাগাতে এসে রোগীদের সঙ্গে প্রচণ্ড খারাপ ব্যবহার করেন স্টাফরা। স্টাফদের যদি দায়বদ্ধতা না থাকে, তাদের কাজ যদি তারা না করে তাদের চাকরি করার প্রয়োজন কী? এছাড়া স্টাফদের কাছে ওষুধ চেয়েও পায় না রোগীরা। ওষুধ চাইলেও স্টাফরা খারাপ ব্যবহার করেন।
 
এ সময় সিআরপি’র খাবার প্রসঙ্গে বলেন, খাবারে অনেক সমস্যা। খাবারের সমস্যা নিয়ে যদি রোগীরা অভিযোগ দেন। তার পরের বেলা বা পরের দিন খাবার ঠিক থাকে। আবার খাবারের মান খারাপ হয়ে যায়। 

সিআরপিতে প্রবেশের পরে ক্ষোভ নিয়ে সারজিস বলেন, সিআরপির প্রধান বিল্ডিংয়ে আমরা যখন আসি। তখন দেখি দৌড়াদৌড়ি করে ফ্লোর মুছে তার উপর স্যাভলন ছিটিয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। আমাদের দেখানোর জন্য এসব করার দরকার কি? আমরা তো প্রতিদিন আসব না। এই জিনিসগুলো রোগীদের জন্য ৩৬৫ দিন হওয়া উচিত । এই রোগীরা কারো কাছে জিম্মি থাকতে পারে না।

এসময় তিনি ম্যানেজম্যান্টের প্রতি আহ্বান রেখে তিনি আরও বলেন, স্টাফ কিংবা ডাক্তার বা খাবারের মানই যাই হোক এর দায় ম্যানেজম্যান্টের। তারা নিজেরা এগুলো ঠিক রাখার জন্য নজর দেবেন বলে আশা করি। 

লোটন আচার্য্য/আরকে