চেয়ারম্যানকে গুলি করে হত্যা, প্রধান আসামি টুকু গ্রেপ্তার
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আলোচিত ইউপি চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টু হত্যা মামলার প্রধান আসামি তরিকুল ইসলাম টুকুকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) রাতে পাবনা সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিজ্ঞাপন
এদিন দিনগত রাত ১টা ৪০মিনিটে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া র্যাব ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার ইলিয়াস খান।
গ্রেপ্তার তরিকুল ইসলাম টুকু দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর গ্রামের মহির উদ্দিন আহমেদের ছেলে।
জানা গেছে, ৩০ সেপ্টেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টুকে এলোপাতাড়ি গুলি করে প্রতিপক্ষের টুকু বাহিনীর লোকজন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলিবিদ্ধ হয়। এতে সেন্টু চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলেই মারা যান।
এ ঘটনায় ০১ অক্টোবর নিহত চেয়ারম্যানের ছেলে আহসান হাবীব কনক বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। এতে টুকুকে হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও প্রধান আসামি করা হয়। এছাড়া মামলায় মোট ১০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৮-১০ জনকে।
এ মামলার প্রধান আসামি টুকু পাবনা সদর উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় আত্মগোপনে ছিলেন। র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অভিযানিক দল সোমবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
এ মামলার পলাতক আসামিরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর এলাকার সোহাগ হোসেন ওরফে গিট্টু (২২), রওশন (২৩), রাসেল (২৭), লালন (২৬), নাঈম (২২), শামসের আলী গিট্টু (২৩), আল আমিন (২০), হিমেল (২৭) ও ইরাক (৩০)। আসামিরা গ্রেপ্তার টুকুর নেতৃত্বে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত।
জানা গেছে, তীব্র গণ-আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ফিলিপনগর এলাকায় বেপরোয়া হয়ে ওঠে টুকু বাহিনী। তরিকুল ইসলাম টুকুর নেতৃত্বে ওই অঞ্চলে হাটঘাট দখল, লুটপাট, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, অস্ত্র ব্যবসা, প্রতিপক্ষের লোকজনের ওপর হামলা, হুমকি-ধামকিসহ নানা অপরাধ শুরু হয়।
তাদের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ আসে ফিলিপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টুর কাছে। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ ও সতর্ক করেছিলেন তিনি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে টুকু বাহিনীর লোকজন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ইউপি চেয়ারম্যান সেন্টুকে গুলি করে হত্যা করে। এছাড়াও অনেক আগে থেকেই আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ব শত্রুতার জেরে তাদের দুপক্ষের বিরোধ ছিল।
এদিকে নিহত নইমুদ্দিন সেন্টু ফিলিপনগর বাজারপাড়ার মুতালিব সরকারের ছেলে। তিনি অনেক আগে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। একসময় উপজেলা বিএনপির সহসভাপতিও ছিলেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। দুইবার ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার ভালো সখ্যতা ছিল।
রাজু আহমেদ/এফআরএস