লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের ব্যবসায়ী হেলাল উদ্দিনকে বৈদ্যুতিক খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতনসহ দোকানের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনায় বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে। রোববার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী মান্দারী বাজারের একটি মিনি চাইনিজ রেস্তোরাঁয় এ সংবাদ সম্মেলন করেন।

এসময় তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনাটি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাসে মান্দারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছেন। ওই টাকাও ফেরত পেতে আকুতি জানিয়েছেন তিনি। সরকার পতন হওয়ায় ঘটনার প্রায় ১ বছর ৭ মাস পর বিচারের দাবি জানান ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী।

ভুক্তভোগী হেলাল সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের হাজী স্টোরের স্বত্বাধিকারী ও মান্দারী ইউনিয়নের দক্ষিণ মান্দারী গ্রামের মৃত হাজী ছেরাজল হকের ছেলে।

সংবাদ সম্মেলনে হেলাল বলেন, মান্দারী বাজারে হেলালের পৈত্রিক সম্পত্তি (১ শতাংশ) রয়েছে। জমিটি তার বাবা তাদের পাঁচ ভাইয়ের নামে দলিল করে দেন। গোপনে আমার অন্য চার ভাই তাদের অংশের জমি মো. মাসুদ নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেয়। ঘটনাটি জানতে পেরে জমিটি ফেরত পেতে ২০২৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি লক্ষ্মীপুর দেওয়ানি আদালতে ৮৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে ইনজেকশন ফেয়ার মামলা করি। আদালতের মাধ্যমে মাসুদ ৮৮ লাখ টাকা গ্রহণ করেন।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী মাসুদের আর ওই জমিতে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু ২৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মাসুদ তার সহযোগী মো. মোরশেদ, দিদার পাটওয়ারী, আরিফ, জসিম, রাজুসহ শতাধিক লোক নিয়ে আমার দোকানে হামলা করে। এসময় আমাকে মারধর করে দোকানের সামনে বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বেঁধে রাখে। শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়। পরে দোকানে থাকা প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় মাসুদসহ অন্যরা। এসময় তারা দোকানের চাবি নিয়ে যায়।

হেলাল আরও বলেন, হামলাকারীরা স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল পাটওয়ারীর অনুসারী ছিল। পরে ঘটনা মীমাংসা করে দেওয়ার কথা বলে চেয়ারম্যান আমার কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে চেয়ারম্যানকে ৩ লাখ টাকা দিলে দোকানের চাবি ফেরত দেওয়া হয়। হামলাকারীরা চেয়ারম্যানের অনুসারী ও আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে ভয়ে কোনো কথা বলতে পারিনি। মামলাও করতে পারিনি। এখন দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়েছে। এজন্য এখন তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস হয়েছে। আমি মাসুদ ও চেয়ারম্যানসহ সবার বিচার দাবি করছি।

এদিকে সরকার পতনের পর থেকে চেয়ারম্যান সোহরাব হোসেন রুবেল পাটওয়ারী আত্মগোপনে রয়েছেন। এ কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। অভিযুক্ত দিদার পাটওয়ারী, আরিফ, জসিম ও রাজুর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।

তবে আরেক অভিযুক্ত গন্ধব্যপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. মোরশেদ বলেন, অভিযোগটি মিথ্যা। এ ধরনের ঘটনা কখনো শুনিনি। আমি কখনো এমন কোনো ঘটনাতে যাইনি।

হাসান মাহমুদ শাকিল/এসএসএইচ