প্রতীকী ছবি

ভোলায় কনে বাড়ির বিয়ের গেটে টাকা কম দেওয়ায় দুইপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ ঘটনায় বরসহ উভয়পক্ষের প্রায় ৩৪ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুর ৩টার দিকে ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচা থানার চরমানিকা ইউনিয়নের ভুইয়ার হাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহতদের মধ্যে ২৪ জনকে চরফ্যাসন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

জানা গেছে, গত ২৫ সেপ্টেম্বর পারিবারিকভাবে দক্ষিণ আইচা থানার জাহানপুর ইউনিয়নের নাসির উদ্দিনের ছেলে মনির হোসেনের সঙ্গে চর মানিকা ইউনিয়ন ভূঁইয়ার হাট গ্রামের নুর আলমের মেয়ে লিমা বেগমের বিয়ে হয়।

রোববার দুপুরে ২৪ জন বরযাত্রীসহ কনে বাড়িতে যান বর মনির হোসেন ও তার স্বজনরা। বরযাত্রী কনের বাড়ির সামনে গেলে গেটে বরযাত্রীকে আটকে দেন কনেপক্ষের লোকজন। এ সময় ১০ হাজার টাকা দাবি করেন কনেপক্ষ। তাদের দাবি করা ওই টাকা দিতে অস্বীকার করলে বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন দুইপক্ষ। একপর্যায়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন তারা।

এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বর মনির হোসেনের খালাতো ভাই মো. নয়ন। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার খালাতো ভাই মনিরের বউ আনার উদ্দেশ্যে গিয়েছিলাম তার শ্বশুরবাড়ি। প্রথমে আমরা সবাই গাড়ি থেকে নেমে গেটের সামনে গিয়ে দাঁড়াই। পরে কনেপক্ষের লোকজন গেট আটকে আমাদের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন। তাদের দাবি করা ১০ হাজার টাকার বিপরীতে আমরা তাদের এক হাজার টাকা দেই। এ নিয়ে প্রথমে বাকবিতণ্ডায় শুরু হয়। পরে আমাদের পক্ষ থেকে এক মুরব্বি কনেপক্ষের লোকজনদের তিন হাজার টাকা দেন। এ টাকাও তারা নেননি। আমরা বলেছি তিন হাজার টাকার বেশি দিতে পারবো না।

তিনি বলেন, আমরা যখন বলেছি তিন হাজার টাকার বেশি দিতে পারবো না, এতেই তারা আমাদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালি শুরু করেন এবং গেটের সামনে রাখা টেবিলের ওপর থেকে বিভিন্ন ধরনের স্প্রে এলোপাতাড়িভাবে আমাদের চোখে-মুখে মারতে থাকেন। এ সময় তাদের লোকজন আমাদেরকে এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করেন।

তিনি আরও বলেন, হামলার একপর্যায়ে বর মনির হোসেন পাশের পুকুরে পড়ে যান। এতে আমাদের ২৪ জন বরযাত্রী গুরুতর আহত হন, আমরা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে কনের বাবা নুর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, গেটে বরকে নিয়ে সবাই আনন্দ করছিলেন। এ সময় হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন বরপক্ষের লোকজন। একপর্যায়ে দুইপক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে আমার পরিবারের ১০ সদস্য আহত হয়েছেন, তারা সবাই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ এরশাদুল হক ভূঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঘটনাটি আসলেই দুঃখজনক। আমি লোকমুখে শুনেছি, তবে থানায় এসে কনে বা বরপক্ষের কেউ লিখিত অভিযোগ দেননি। তারপরও আমি খোঁজ-খবর নিচ্ছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এএমকে