মানুষের উন্নয়ন ও ভাগ্য পরিবর্তনে জামায়াত ও জনগণের ঐক্য প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম। রোববার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নোয়াখালীর নোয়া কনভেনশন সেন্টারে জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার ১৫ বছর দেশের জনগণের ওপর জুলুম নির্যাতন করে পাঞ্জাবিদের ঘৃণিত কাজকে ও হার মানিয়েছে। পিলখানা হত্যাকাণ্ড ও ভারতের ইশারায় সেনাবাহিনীর যোগ্য অফিসার হত্যার সঙ্গে শেখ হাসিনা সরকার জড়িত, শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি করে লাখো বিনিয়োগকারীকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বিদ্যুৎ বন্ধ করে অন্ধকারে মতিঝিলে হেফাজতের মাহফিলে নজিরবিহীন হত্যাকাণ্ড চালিয়ে অসংখ্য ট্রাক ভর্তি করে মরদেহ মাটি চাপা দিয়েছে, অসংখ্য ভাইকে ঘুম করে আয়নাঘরের মতো নৃশংসতার নজির স্থাপন করেছে।

এটিএম মাসুম বলেন, লাখ লাখ নারী-পুরুষকে মামলা দিয়েছে, সাজা দিয়েছে। দেশের অর্থনীতি ধ্বংস, ব্যাংক লুট করে যার মধ্যে ইসলামী ব্যাংক সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এস আলমকে দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করার সুযোগ করে দিয়েছে হাসিনা সরকার। লুটপাট করা এসব সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। তাই দেশের মানুষের উন্নয়ন ও ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য জামায়াত ও জনতার ঐক্য প্রয়োজন।

স্বৈরাচারী হাসিনার সরকার শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসলামী নীতিমালার শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে, প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করে, সব মাদ্রাসা এবং কওমি মাদ্রাসার শিক্ষাকে ধ্বংস করেছে আওয়ামী সরকার। সব জায়গায় ইসলাম বিদ্বেষী প্রথা চাপিয়ে দেয়। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইকরা, উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট থেকে রাব্বি জিদনী ইলমা বাতিল করেছে।

জামায়াতের এ নেতা বলেন, পুলিশ বাহিনীকে দিয়ে সবচেয়ে বেশি গুম, খুন, হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। পুলিশ বাহিনীকে সবচেয়ে বড় দুর্নীতিগ্রস্ত করে প্রস্তুত করা হয়েছে। হাসিনা সরকার সীমান্ত হত্যার বিচার করেনি এবং কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করে ভারতের অ্যাজেন্ডা ও প্রয়োজন পূরণ করেছে। বাংলাদেশকে ভারতের মার্কেটে পরিণত করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ধ্বংস করেছিল, বাংলাদেশকে পরিপূর্ণ ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার মতো জঘন্য পরিকল্পনা স্থাপনের চেষ্টা চালিয়েছে তারা।

আল্লাহ জালিমকে ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না উল্লেখ করে এটিএম মাসুম বলেন, শেখ হাসিনার আমলে অগণিত আলেম নির্যাতনের শিকার হতে হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে দুধের শিশু কোলে নিয়ে মায়েরা, ভাইয়েরা, সাধারণ সর্বস্তরের জনগণ স্বৈরাচারী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। আল্লাহ জালিমকে ছাড় দেন কিন্তু ছেড়ে দেন না। তাই প্রতিরোধে ৫ আগস্ট বিপ্লব বা দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, হাসিনা দেশে মানুষের কল্যাণের জন্য আসেননি, বরং ক্ষমতায় এসেছিল তার বাবার হত্যার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য। হাসিনার আমলে জঘন্য ভোট কারচুপির নির্বাচন সংঘটিত হয়। আলোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে ৫ আগস্টের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে, সেজন্য আমাদেরও সংগঠনকে প্রস্তুত করতে হবে।

জেলা সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিনের সঞ্চালনায় ও জেলা আমির ইসহাক খন্দকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কুমিল্লা মহানগরীর আমির কাজী দীন মোহাম্মদ। সম্মেলনে দারসে কুরআন পেশ করেন কুমিল্লা অঞ্চলের টিম সদস্য প্রফেসর লিয়াকত আলী ভুইয়া।

হাসিব আল আমিন/এসএসএইচ