পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় রাতের আঁধারে মাছের ঘেরে বিষ প্রয়োগ করে কয়েক হাজার মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানা যায়। শনিবার (১২ অক্টোবর) ভোরে উপজেলার লতাচাপলী ইউনিয়নের পুনামাপাড়ার বাসিন্দা সানু মিয়ার ঘেরে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বরাবরের মতো শুক্রবার দিবাগত রাতে মাছের ঘেরে খাবার দিয়ে বাসায় যান সানু মিয়া। শনিবার সকালে এসে দেখেন কে বা কারা ঘেরে বিষ প্রয়োগ করেছে। এতে ঘেরের বড় মাছগুলো ছোটাছুটি করছে এবং ছোট মাছগুলো মরে পানিতে ভাসতে থাকে। এ ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

প্রতিবেশী বৃদ্ধ জুয়েল ফরাজী বলেন, আমাদের এই অঞ্চলের খুব কম মানুষ মাছ চাষ করে। অনেক আশা নিয়ে সানু মিয়া মাছ চাষ করেছেন। অনেক টাকা বিনিয়োগ এবং দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয় মাছ বিক্রি করতে। কিন্তু দুর্বৃত্তদের বিষে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সব মাছগুলো মরে গেল। এভাবে চললে মাছ চাষ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া কোনো উপায় থাকবে না।

ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষি খুবই দয়ালু মানুষ উল্লেখ করে স্থানীয় মসজিদের ইমাম ইউসুফ মুসুল্লি বলেন, সানু মিয়া আমাদের এই মসজিদের একজন মুসুল্লি তার ঘেরে বিষ প্রয়োগের খবর পেয়ে এসে দেখলাম সব মাছ মরে ভেসে উঠছে। কে বা কারা এমন বড় ক্ষতি করলো। এটার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচারের দাবি জানাই।

ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ক্ষতিগ্রস্ত সানু মিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, গভীর রাতে কে আমার এতো বড় ক্ষতি করলো তা আমি জানি না। সকালে এসে দেখি আমার ঘেরের সব মাছ ভেসে উঠেছে। পানি বেশি থাকায় তাৎক্ষণিক মাছ ধরতেও পারি নাই। এতে আমার ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমি এর বিচার চাই।

লতাচাপলি ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে বিষয়টি জানার জন্য ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি, সাংগঠনিক, সিনিয়র সহসভাপতিসহ ঘটনাস্থলে এসেছি। এটি খুবই দুঃখজনক বিষয়। কে বা কারা করেছে এখনো নিশ্চিত নই। তবে ভুক্তভোগী শানু মিয়াকে মহিপুর থানায় বিষয়টি অবহিত করার কথা জানিয়েছি। বিএনপির পক্ষ থেকে তাকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম বলেন, এটি সত্যিই দুঃখজনক। এ বিষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যচাষিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে আমরা সার্বিক সহযোগিতা করবো। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীকে আইনের আওতায় আনা হবে।

এসএম আলমাস/এএমকে