শারদীয় দুর্গাপূজার মহা অষ্টমীর দিন ৫০ জন মায়ের মা ধুয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন তাদের সন্তানেরা। মায়ের পা ধুয়ে সম্মান জানাতে পেরে একদিকে যেমন সন্তানরা খুশি, অন্যদিকে সন্তানদের এমন ভালোবাসায় আবেগাপ্লুত হয়েছেন মায়েরাও।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে যশোর শহরের বেজপাড়া পূজা মন্দিরে এমন ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যশোরের বেজপাড়া বয়েজ ক্লাব পূজা কমিটি।

ব্যতিক্রমী এ আয়োজন উপলক্ষ্যে সকালে মন্দির প্রাঙ্গণে চেয়ারে সারিবদ্ধ হয়ে বসেন বিভিন্ন বয়সী ৫০ জন মা। প্রথমে ধান ও দূর্বা দিয়ে আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন সন্তানরা। এ সময় পানি নিয়ে একসঙ্গে ৫০ মায়ের পা ধুয়ে দেন সন্তানেরা। পরে তারা মায়েদের মিষ্টিমুখ করান। এ সময় আবেগাল্পুত মায়েরা সন্তানকে জড়িয়ে ধরে আশীর্বাদ করেন। সন্তানরাও মেতে ওঠেন আনন্দে।

অনুষ্ঠানে মায়ের পা ধুয়ে দেওয়া যশোর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী অধরা বিশ্বাস বলেন, প্রত্যেক সন্তানই তার মা-বাবাকে ভালবাসে। তবে সেটা বেশিরভাগ সময় প্রকাশ করতে পারে না। আজকে আমরা এমন একটা সুযোগ পেয়েছি।

অধরা বিশ্বাসের মা ঝুমুর গুপ্তা বলেন, সন্তানের প্রতি মায়ের আশীর্বাদ সব সময় থাকে। দেবী দুর্গার সামনে সন্তানকে আশীর্বাদ করতে পেরেছি। 

'খড়ের প্রতিমা পূজিস্‌ রে তোরা, মাকে ত’ তোরা পূজিস্‌নে! প্রতি মা’র মাঝে প্রতিমা বিরাজে হায় রে অন্ধ, বুঝিস্‌নে’– পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন জাতীয় কবি কাজী নজরুর ইসলামের এই গানের উদাহরণ টেনে বলেন, আমাদের বাড়িতেই মা রয়েছে। সেই মাকে আমরা যত্ন করি না। অথচ প্রতিমা দুর্গাকে যত্ন করি। এতে দেবী দুর্গা খুশি হন না। যদি নিজেদের মাকে শ্রদ্ধা করি, তাহলেই মা দুর্গা খুশি হন। 

এর আগে শুক্রবার সকালে এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। বেজপাড়া বয়েজ ক্লাব পূজা কমিটির সভাপতি সুশীল বিশ্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন ড. তাপসী কাপুড়িয়া, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন, সাধারণ সম্পাদক তপন ঘোষ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি সন্তোষ দত্ত, সহ-সভাপতি অসীম মণ্ডল প্রমুখ।

এ্যান্টনি দাস অপু/আরকে