রাজবাড়ীতে সব ধরনের সবজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বাজারের এই পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এতে হতদরিদ্ররা তো বটেই, মধ্যবিত্তরাও বাজার করতে হিমশিম খাচ্ছে।

শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে রাজবাড়ী বড় বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৫৫ টাকা, মরিচ ৩৬০, শসা ৬০ থেকে ৮০, পেঁয়াজ ১১০, কুমড়া ৬০, ধুন্দল ৬০, ঝিঙে ৭০, কঁচুমুখী ৭০, বাঁধাকপি ৭০, ফুলকপি ১২০, বেগুন ৯০, লাফা বেগুন ১২০, করলা ৯০, পটল ৮০, ঢেড়শ ৮০, পেঁপে ৪০, রসুন ২২০ ও আদা ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি লাউ ৭০ টাকা, লেবুর হালি ১০ থেকে ২০ টাকা ও কাঁচা কলা ২৫ টাকা হালি হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। 

বিনোদপুরের বাসিন্দা রবি দাস একটি কোম্পানির সেলসম্যান হিসেবে কাজ করেন। তিনি বলেন, ৪ দিন আগে কাঁচা বাজার করে নিয়ে গেছি। আজ আবার বাজার করতে এসেছি। এ কয়দিনে দাম যা দেখছি, কিছুই কেনার উপায় নেই। আলু আর পেঁপে বাদে কোনো সবজির দাম ৭০ টাকার নিচে নেই। এভাবে দাম বাড়তে থাকলে চলা খুবই কষ্ট হয়ে যাবে। বাজার করে নিয়ে কত টাকা দিয়ে বাজার করেছি বাসাই বললে কেউ বিশ্বাস করে না। বাজার স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

দাদশী ইউনিয়নের সিংগা বাজার এলাকার বাসিন্দা আকরাম ইসলাম বলেন, আমি নিজে একজন কৃষক। আজ ২৫০ গ্রাম মরিচ কিনে যাচ্ছি ৯০ টাকা দিয়ে। প্রতিটা সবজির দাম অনেক বেড়েছে। বৃষ্টি বেশি হলে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়। তখন দাম বেড়ে যায়।

রাজবাড়ী বাজারের খুচরা তরকারি বিক্রেতা ইমন বলেন, বৃষ্টিতে সবজির আমদানি অনেক কম। এদিকে পূজার মধ্যে প্রতিটা মন্দিরেও অনেক সবজির প্রয়োজন হচ্ছে। সবদিক মিলিয়ে সবজির দাম বেড়েছে। দাম বাড়ার কারণে বেচাকেনাও অনেক সমস্যা হচ্ছে। যিনি আগে ১ কেজি কিনতেন তিনি এখন ৫০০ গ্রাম নিচ্ছেন। আমরা যেভাবে কিনবো সেভাবে বিক্রি করবো। তবে দাম কমে আসবে৷

এদিকে খুচরা দোকানে ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি হালি ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়। খুচরা দোকানদার গোঁরচাদ বলেন ডিম ৩৯০ টাকা ট্রে কিনে এনেছি। আমি হালি ৫৫ টাকা বিক্রি করছি। আবার কেউ ১ পিস নিলে ১৫ টাকায় বিক্রি করছি।

বিসমিল্লাহ ডিম আড়তের মালিক হাবিব উল্লাহ বলেন, ব্রয়লারের ডিম ৩৮০-৪০০ টাকা ট্রে বিক্রি করছি। ডিমের আমদানি কম হওয়াতে দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক কাজী রকিবুল হাসান বলেন, আমরা শুক্রবার ছাড়া প্রতিদিনই বাজার তদারকি করছি। মরিচসহ অন্যান্য সবজি বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। অসময়ে বৃষ্টি আর অতিরিক্ত খরাতে মরিচ গাছের সমস্যা হয়। অতিরিক্ত বৃষ্টিতে মরিচ গাছের গোড়া পচে যায়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বন্যার কারণে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য প্রতি বছরের তুলনায় এবার সবজির উৎপাদন কম। তাই দাম বেড়েছে।

মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/এফআরএস