ভারত থেকে আমদানি করা রেলওয়ের পণ্যবাহী ৩০টি ওয়াগনের পরীক্ষামূলক চলাচল (ট্রায়াল রান) সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৯ অক্টোবর) নীলফামারীর সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা থেকে পঞ্চগড় পর্যন্ত ৩১০ কিলোমিটার রেলপথে সর্বোচ্চ ৮০ কিলোমিটার গতিতে এই ওয়াগনগুলো পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হয়। এ সময় পর্যাপ্ত লোড থাকলেও চলাচলে কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা যায়নি। এর আগে কারখানার ওয়াগন শপে এগুলো রক্ষণাবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানা সূত্রে জানা গেছে, একসময় পণ্যবাহী ওয়াগনে সারা দেশে মালামাল পরিবহন করা হতো। পরে সড়কপথে ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে পণ্য পরিবহনের পরিমাণ বাড়লে রেলওয়ে খাত অবহেলিত হয়ে পড়ে। এ জন্য রেলপথে পণ্য পরিবহনে উৎসাহিত করতে উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা নিরাপদ ও কম খরচে মালামাল পরিবহনের অংশ হিসেবে ভারত থেকে ২৯০টি ওয়াগন আমদানি করার উদ্যোগ নেয়। সেখান থেকে ৩০টি ওয়াগন গত সেপ্টেম্বর মাসে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আনা হয়। এরপর কারখানার ওয়াগন শপে ৩০টি ওয়াগনের প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়।

এরপর কারিগরি দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রতিটি ওয়াগনে পর্যাপ্ত লোড দিয়ে বুধবার পরীক্ষামূলক চলাচল করা হয়। সকাল ৯টায় সৈয়দপুর কারখানা থেকে ৩০টি ওয়াগন, একটি গার্ড ভ্যানসহ রেলওয়ের বহর (র‍্যাক) পার্বতীপুরে উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এরপর পার্বতীপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে পঞ্চগড়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম স্টেশনের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে সেখানে পৌঁছানোর পর পুনরায় সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার উদ্দেশ্যে রওনা দেয় ওয়াগনগুলো।

পরীক্ষামূলক চলাচলে নেতৃত্ব দেন সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার উৎপাদন প্রকৌশলী (পিই) জাহিদ হাসান। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন ওয়াগন আমদানি প্রকল্পের কার্যব্যবস্থাপক ফয়েজ আহমেদ খান, ওয়াগন শপের ইনচার্জ ঊর্ধ্বতন উপসহকারী নিজামুল হকসহ সংশ্লিষ্ট শাখার শ্রমিক-কর্মচারীরা।

ওয়াগন শপের ইনচার্জ নিজামুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ওয়াগনের ট্রায়াল রান সফল হয়েছে। সর্বোচ্চ গতি ৮০ কিলোমিটার তোলা হয়। পর্যাপ্ত লোড থাকলেও কোনো কারিগরি ত্রুটি দেখা যায়নি। ওয়াগনগুলো বেশ উন্নত মানের। বর্তমানে এসব কারখানার ভেতরে রাখা হয়েছে আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব ওয়াগনগুলো ট্রাফিক বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

প্রকৌশলী জাহিদ হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ট্রায়াল রান গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রক্রিয়া। সফলভাবে সেই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ট্রায়াল রানে যাওয়ার আগে ওয়াগনগুলোর যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও কারিগরি দিক গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার ওয়াগন শপে সেই কাজ করা হয়।

শরিফুল ইসলাম/এএমকে