ছুরিকাঘাতে আহত হওয়ার ৯ দিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় জুনায়েদ আল হাবিব নামের এক যুবক মারা গেছেন। তার মৃত্যুর খবর শুনে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন দাদি রেহেনা খাতুন (৮০)।

মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টায় নিজ বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের বটিয়ারায় তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন নিহতের ছেলে জসিম উদ্দিন। রেহেনা ওই এলাকার মৃত আব্দুল আহাবের স্ত্রী।

নিহতের পরিবারের দাবি, বৈষম্যবিরোধ ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার কারণে ২৮ সেপ্টেম্বর জুনায়েদ আল হাবিবকে ছুরিকাঘাত করে স্থানীয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা স্বাধীন ও পিয়ালের নেতৃত্বে কয়েকজন নেতাকর্মী। টানা ৯ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি গ্রিন লাইফ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। জুনায়েদ ছিলেন পরিবারে একমাত্র সন্তান। নাতির অকালমৃত্যু মেনে নিতে পারেননি দাদি রেহেনা খাতুন। রাতে মৃত্যুর খবরটি শোনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। তারপর মঙ্গলবার রাতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তার মৃত্যু হয়।

বুধবার (৯ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বটিয়ারা এলাকায় নিহত জুনায়েদ ও তার দাদি রেহানা খাতুনের জানাজা একসঙ্গে অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।

নিহত জুনায়েদের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, আমার একটা মাত্র সন্তান ছিল। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যাওয়ার কারণে তাকে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে সন্তান হত্যার বিচার চাই।

নিহত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা জুনায়েদের স্বজনদের সান্ত্বনা দিতে গিয়ে বিএনপি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, স্বৈরাচার হাসিনাকে হটাতে আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা ছিল জুনায়েদের। তাই ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা তাকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। জুনায়েদের মৃত্যুর শোকে তার দাদিও মারা গেছেন। আমরা তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। সেইসঙ্গে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

জানতে চাইলে রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার জানান, হত্যার ঘটনায় জড়িত স্বাধীন, পিয়ালসহ ১৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেছেন জুনায়েদের চাচা মো. শফিক। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।

তন্ময় সাহা/এসএসএইচ