টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণায় সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। জেলার পূর্বধলা, কলমাকান্দা, দূর্গাপুরে কিছুটা উন্নতি হলেও সদর ও বারহাট্টা উপজেলার নিম্নাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। আজ সবকটি নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, আজ বুধবার (৯ অক্টোবর) উপদাখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার কংস নদীর পানি জারিয়া পয়েন্টে ৬৪ সেন্টিমিটার, সোমেশ্বরী নদীর পানি দূর্গাপুর পয়েন্টে ২.৪৯ মিটার ও ধনু নদীর পানি খালিয়াজুড়ি পয়েন্টে ১.৬১ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে উপদাখালী পানি গতকাল কলমাকান্দা ডাকবাংলো পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইলেও আজ তা ১০ সেন্টিমিটার কমে ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এদিকে বন্যার পানি কমলেও বানভাসি মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে। মানুষের মধ্যে তীব্র খাবার সংকট ও গবাদিপশুর খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বন্যার পানিতে কৃষকের আমন ফসল ও পুকুরের মাছ ভেসে যাওয়ায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক ও মৎস্য খামারিরা। প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, নেত্রকোণার বিভিন্ন উপজেলায় প্লাবিত হয়েছে অন্তত ২৭টি ইউনিয়নের ১৪০টি গ্রাম। পানিবন্দি হয়েছেন কমপক্ষে ৬৫ হাজার মানুষ। আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েছে ৪৩টি পরিবার। পানিতে তলিয়ে গেছে ২৪ হাজার হেক্টর জমির আমন ধান। ভেসে গেছে ১৪০০ পুকুরের মাছ, যার আনুমানিক ক্ষতি ৭০০ কোটি টাকা।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য অনুযায়ী, বন্যা ও জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন উপজেলার ১৮৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

জেলা প্রশাসন থেকে গতকাল পর্যন্ত ৮০০ প্যাকেট শুকনো খাবার, তিন লাখ টাকা ও ৭০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হলেও তা সব এলাকায় পৌঁছেনি বলে অভিযোগ বন্যায় পানিবন্দি মানুষদের।

চয়ন দেবনাথ মুন্না/এমজেইউ