শরীরে ব্যবহৃত স্বর্ণ কাল হলো ফিরোজার, গ্রেপ্তার ২
বিধবা বৃদ্ধা ফিরোজা বেগম (৭৫) স্বামীর ঘরে একা থাকতেন। তিনি সব সময় হাতে দুটি স্বর্ণের বালা, গলায় চেইন, কানে দুল ও হাতে দুটি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতেন। সেদিকে লোভ হয় সুমন ও বেলালের। যেমন পরিকল্পনা তেমন কাজ। বৃদ্ধার পরিহিত স্বর্ণালঙ্কার লুট করে মরদেহ পুকুর পাড়ে ফেলে পালিয়ে যান তারা। পরে দীর্ঘ ৩ মাস ছিলেন আত্মগোপনে। অবশেষে ধরা খেলেন র্যাবের হাতে।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-১১ সিপিসি-৩।
বিজ্ঞাপন
গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন সুমন (৩৫) কবিরহাট উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের আবু ছালেমের ছেলে ও সালাউদ্দিন বেলাল (৩৬) একই ইউনিয়নের মৃত আমিনুল হকের ছেলে।
আরও পড়ুন
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ফিরোজা বেগম স্বামীর ঘরে একা থাকতেন। প্রতিদিনের ন্যায় ফিরোজা বেগম নিজ কক্ষে একা ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে তার বড় ছেলে রফিক উল্যাহ ঘুম থেকে উঠলে মায়ের ঘরের দুটি দরজা খোলা দেখেন। পরে তাকে তার এক ভাগনে জানান তার মায়ের বসত ঘরের সিঁধ কাটা রয়েছে। পরবর্তীতে বসত ঘর সংলগ্ন পুকুর পাড়ে তার পা বাঁধা মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে তার এক নাতি তার বড় ছেলে রফিক উল্যাহকে বিষয়টি জানায়।
র্যাব-১১ সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুন শনিবার ভোরে নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চায়ের বাড়ির পুকুর পাড় থেকে ওই বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত ফিরোজা বেগম উপজেলার ধানশালিক ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের পঞ্চায়ের বাড়ির মৃত আবু বক্কর ছিদ্দিকের স্ত্রী।
নিহত বৃদ্ধা সব সময় হাতে দুটি স্বর্ণের বালা, গলায় হার, কানে দুল ও হাতে দুটি স্বর্ণের আংটি ব্যবহার করতেন।
র্যাব-১১, সিপিসি-৩ নোয়াখালীর কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) সহকারী পুলিশ সুপার মো. গোলাম মোর্শেদ ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বিষয়টি একটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান হয়। ভুক্তভোগীর মেজো ছেলে বাদী হয়ে কবিরহাট থানায় অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। র্যাব-১১, সিপিসি-৩, নোয়াখালী এই ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও আসামি শনাক্তে তদন্ত শুরু করে।
তিনি বলেন, ৮ অক্টোবর সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে নোয়াখালী জেলার কবিরহাট খানাধীন ধানশালিক ইউনিয়নের কাবলীর মোকাম বাজার এলাকা থেকে এই ক্লুলেস মামলার সন্দিগ্ধ দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার বিষয়টি স্বীকার করেছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নোয়াখালীর কবিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
হাসিব আল আমিন/এমএসএ