শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত স্থানে একাডেমিক ভবন নির্মাণের দাবিতে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে এক ঘণ্টা আন্দোলন করেছেন। পরে শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষের ভেতর ঢুকে তাদের এক দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য অবস্থান নেন।

জানা গেছে, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজের একাডেমিক ভবন নির্মাণের জন্য সম্প্রতি কলেজ ক্যাম্পাসের ভেতরে একটি জায়গায় মাটি পরীক্ষার কাজ শেষ করা হয়। পরবর্তীতে শিক্ষা প্রকৌশল বিভাগ ওই ভবন নির্মাণের জন্য কার্যক্রম শুরু করলে তৎকালীন জেলা প্রশাসক এতে বাধা দেন। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, জায়গাটি শত্রু সম্পত্তি বিধায় সেখানে স্থায়ী কোনো স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েক দফা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এরপরও কোনো সুরাহা না হওয়ায় গতকাল ৭ অক্টোবর এক দফা দাবি জানিয়ে বর্তমান জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের কাছে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। কিন্তু ২৪ ঘণ্টা পার হওয়ার পরও এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় আজ মঙ্গলবার দুপুরে শিক্ষার্থীরা কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের‌ করে জেলা প্রশাসকের বাসভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন। এরপর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় গিয়ে তারা অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা তাৎক্ষণিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য বিক্ষোভ করতে থাকেন।

একপর্যায়ে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামসহ জেলা প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু এতে তারা না মেনে জেলা প্রশাসকের অফিস কক্ষে অবস্থান নিয়ে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য স্লোগান দিতে থাকেন। এর ঘণ্টাখানেক পর কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল আ জ ম রেজাউল করিম খানসহ অন্য শিক্ষকরা এসে বিষয়টি নিয়ে বৈঠকে বসেন। একপর্যায়ে জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান ওই ভবন নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়িতা অধিকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত স্থানে ভবনের কাজ শুরু করার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে তিনি নির্ধারিত স্থানে এ ভবন নির্মাণে জেলা প্রশাসকের কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়ে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন। পরে জেলা প্রশাসককে ধন্যবাদ জানিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের বাসভবনের তালা খুলে দিয়ে কলেজে ফিরে যান।

এ বিষয়ে আ জ ম রেজাউল করিম খান বলেন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, কলেজের শিক্ষকরা বসে সুন্দর একটি সমাধান হয়েছে। তাৎক্ষণিক শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরেরকে ভবন নির্মাণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেন জেলা প্রশাসক। বৃষ্টি না থাকলে আগামীকাল ভিত্তিপ্রস্তর নির্মাণ করা হবে। শিক্ষার্থীদের যে দাবি ছিল, যে জায়গায় সয়েল টেস্ট হয়েছিল সেই জায়গাতেই ভবন নির্মিত হবে। শিক্ষার্থীদের ভবন নির্মাণের যে দাবি ছিল সেটি বাস্তবায়ন হলে তারা ক্লাসে ফিরে যাবে।

মো. নাইমুর রহমান তালুকদার/এমজেইউ