‘পানির এক ধাক্কায় গ্রামের যত মাটির ঘর ছিল সব শেষ’
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার বনকালি বাগপাড়া মরিয়ম নগর মিশন এলাকার ৬০ বছরের বৃদ্ধা মিথিলা। নিজের পরনের কাপড় ছাড়া কিছুই এখন নেই তার।
টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সব কিছু শেষ হয়ে গেছে তার। ৪ অক্টোবর সকালে পাহাড়ি ঢলে মাটির ঘরের নিচে চাপা পড়েন মিথিলা। কোনোমতে বেঁচে বের হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
টানা বৃষ্টিতে ৪ অক্টোবর ভোর থেকেই শেরপুর ঝিনাইগাতী উপজেলায় মহারশী নদীর অনেক জায়গায় ভাঙনের দেখা দেয়। এছাড়া ঝিনাইগাতীতে স্মরণকালের ভয়াবহ পাহাড়ি ঢলে অনেক মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে ও ডুবে গেছে।
এই ইউনিয়নের বনকালি বাগপাড়া মরিয়ম নগর মিশন এলাকার গারো পাড়ায় সবার মাটির ঘর ভেঙে গেছে। সোমবার (৭ অক্টোবর) পানি কমে যাওয়ায় ভেসে উঠছে ক্ষতির চিহ্ন।
মিথিলা বলেন, আমার জীবনে এত পানি দেখি নাই। রাতে বৃষ্টি হচ্ছিল অল্প পরিমাণে পানি ছিল উঠানে। সকালের দিকে পানি আমার গলা পর্যন্ত। মাটির ঘর ভেঙে পড়ে আমার ওপর। ঘর থেকে যে কাপড় বের করব কোনো উপায় পাইনি। নিজের পরনের কাপড় ছাড়া এখন আর কিছুই নেই। খাব কী, থাকব কোথায় এটাও জানি না। আমার জীবনে এত পানি আমি দেখিনি ভাইগো। আমরা গরিব মানুষ ভাইগো, এত কষ্ট আমরা কোনো দিন করিনি। ঘর-বাড়ি ভাঙা গেছে আমরা কী করি ভাইগো।
আরও পড়ুন
একই অবস্থা রুবেলের। তার সবজি বাগান, ঘরবাড়ি সব শেষ। পাহাড়ি ঢল সব কিছু নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, পানির এক ধাক্কায় এই গ্রামের যত মাটির ঘর ছিল সব শেষ হয়ে গেছে। এক গলা পর্যন্ত পানি আমাদের ঘরে ছিল। এরকম পানি কোনোদিন দেখি নাই। আমাদের এই এলাকার মানুষের সব কিছু শেষ করে দিছে। এই পাড়ার সবার মাটির ঘর বিলীন হয়ে গেছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, যাদের মাটির ঘর ভেঙে গেছে তাদের বিষয়ে শেরপুরের জেলা প্রশাসক স্যারের মাধ্যমে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তাদের ওখান থেকে চিঠি আসার পরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাইমুর রহমান/আরকে