বান্দরবান জেলায় সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু একটি আতঙ্কের নাম। বিগত বছরগুলো থেকে চলতি বছরে এই ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন জেলার বেশ কয়েকজন।

তবে স্থানীয় জনসাধারণ মনে করছেন বান্দরবান পৌরসভার মশক নিরোধক অভিযান অনেকটাই কম হচ্ছে বলে তারা মশাবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বেশি। পৌরসভার পাশাপাশি মশার বংশবিস্তার রোধে বেশ কয়েকটি সামাজিক সংগঠনও নিজ উদ্যোগে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করছে। তবে নিজেদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি না হলে এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বান্দরবান সদর হাসপাতালে দেখা যায়, গত একদিনেই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৬ জন। এছাড়া রুমা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ১ জন এবং আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ২ জনসহ মোট ৯ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এছাড়া প্রায় প্রতিদিনই বাড়ছে হাসপাতালে আসা রোগীর সংখ্যা।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যমতে, চলতি বছরের অক্টোবর মাস পর্যন্ত জেলায় মোট ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ৪৭৭ জন। এর মধ্যে ৪৫৮ জন রোগী চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন, এখন পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৯ জন রোগী।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবু রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বছরের সেপ্টেম্বর, অক্টোবর মাস ডেঙ্গুর একটি পিক সিজন। এসময় প্রচুর বৃষ্টিপাতের কারণে পরিত্যক্ত বিভিন্ন জায়গা, নালা নর্দমা, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসায় পরিষ্কার পানি জমে থাকে। এতে এডিস মশার অবাধ বংশবিস্তার ঘটে।

তিনি বলেন, আমরা যদি প্রথমেই নিজেরা সচেতন হয়ে আমাদের চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারি তাহলে প্রথম পর্যায় থেকেই এডিস মশার বিস্তার অনেকটা কমে যাবে। এছাড়া এডিস মশার কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করতে দিনে ও রাতের বেলায় ঘুমানোর সময় মশারি টানানো জরুরি। ডেঙ্গু প্রতিরোধে আক্রান্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসার জন্য বান্দরবান সদর হাসপাতালসহ ৬টি উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসার পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদ আছে।

এডিস মশার বিস্তার রোধে নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জ্বর হলে অবশ্যই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করতে বান্দরবান জেলার জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানান বান্দরবান জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান।

শহীদুল ইসলাম/পিএইচ