জামালপুর-শেরপুর সেতুর পিলার সংলগ্ন পশ্চিম প্রান্তের পুরাতন ফেরিঘাট এলাকায় শহর রক্ষা বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রায় ১৫ মিটার জায়গাজুড়ে ধসে গেছে শহররক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক ও রাস্তা। বন্ধ রয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ঝুঁকিতে রয়েছে জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ভাঙনের জায়গাটি স্থানীয়দের উদ্যোগে সুরক্ষার জন্য বাঁশ দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। 

বাঁধটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান। 

পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার পানি সেতুর গোড়ার কাছে যে পাইপ আছে সেটি দিয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে পড়তো। কয়েক দিন ধরে টানা ভারী বর্ষণের ফলে সেতুর নিচের পাইপের জায়গা থেকে মাটি সরে গিয়ে ভাঙন শুরু হয়। প্রথমে ছোট গর্ত হলেও পরে তা বড় গর্তের আকার ধারণ করে।

পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার ফরহাদ হোসেন বলেন, এখানে অল্প গর্ত ছিল। পানি নিষ্কাশনের জায়গা নেই, আবার বৃষ্টি হওয়ার পরে আস্তে আস্তে বিশাল গর্তের আকার ধারণ করেছে। এই গর্তের কারণে অনেকের বাড়িঘর হুমকিতে আছে। যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ হয়ে গেছে, আমরা এলাকাবাসী অনেক দুর্ভোগে আছি। বাঁধটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাই। 

পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য মতে, জামালপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষা করার জন্য ২০১৩ সালে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। এই বাঁধ সংলগ্নে রয়েছে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপারের (এসপি) বাসভবন,পুলিশ সুপারের কার্যালয়, পৌরসভা, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল, জিলা স্কুল, পৌর কমিউনিটি সেন্টার, এলজিইডি ভবন, সার্কিট হাউস, জজকোর্ট, জেলা পরিষদ ভবন, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার ব্রহ্মপুত্র সেতু। শহরের পাথালিয়া থেকে পুরাতন ফেরিঘাট পর্যন্ত সাড়ে ৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের বাঁধটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ৫১ কোটি টাকা।

বাঁধ এলাকার খোদেজা বেগম বলেন, বাঁধটি মেরামত না করা হলে ঘরবাড়ি সব নদের মধ্যে চলে যাবে। আমাদের কোনো উপায় থাকবে না। আমরা রাস্তাও পাব না, সারা শহরের পানি এই দিক দিয়ে আসে, কিন্ত বের হতে পারে না, এখন গর্ত হয়ে গেছে রাস্তা ভেঙে শেষ। যাতায়াতের রাস্তা নেই। আমরা দ্রুত এটি মেরামত চাই।

পুরাতন ফেরিঘাট এলাকার মমতা বেগম নামে আরেক বাসিন্দা বলেন, ঘরবাড়ি ভেঙে নদের মধ্যে চলে যাচ্ছে। আমরা আগেই নদী ভাঙা। এখন বাড়িঘর আবার ভেঙে যাইতেছে। একটা ব্যবস্থা খুবই প্রয়োজন।

জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নকিবুজ্জামান খান জানান, কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। বাজেট করা আছে, দ্রুতই টেন্ডারের মাধ্যমে মেরামত করা হবে।

আরএআর