ভারী বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে আবারও নেত্রকোণার প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে।

রোববার (৬ অক্টোবর) সাড়ে ১২টায় পাওয়া তথ্যানুযায়ী, কংস নদ পানি জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে উপদখালী নদীর পানি কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ও সোমেশ্বরী নদীর পানি দুর্গাপুর পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে কলমাকান্দার ৮টি ইউনিয়নের মধ্যে ৬টি ইউনিয়নের ৫৫টি গ্রামে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। উঠতি আমন ধানের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, প্রায় ১৩ হাজার হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে করে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন কৃষকরা।

কংস ছাড়া জেলার প্রধান নদ-নদী, সোমেশ্বরী, মগড়া ও ধনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনো বিপৎসীমা ছাড়ায়নি। গ্রামীণ রাস্তা, পুকুর, ঘরবাড়ি ও বিদ্যালয় প্লাবিত হয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় বাড়ি-ঘরে পানি উঠে যেতে পারে।

নেত্রকোণা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলে জেলার প্রধান নদ-নদীর পানি বেড়েই চলেছে। এখন পর্যন্ত সবগুলো নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে।

কলমাকান্দা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বৃষ্টি হওয়াতে নদীতে পানি বাড়ছে তবে তা এখনো সব পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি করছি, বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে আমরা প্রস্তুত আছি। আমাদের আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ রেডি আছে। প্রয়োজন পড়লে বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণ করা হবে।
 
দুর্গাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, বৃষ্টি আর উজানের ঢলের পানিতে উপজেলার কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও কাকৈরগড়া ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম তলিয়ে গেছে। এতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

চয়ন দেবনাথ মুন্না/আরকে