আগামী ৯ অক্টোবর ষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হলেও এখনো শেষ হয়নি রঙের কাজ। তাই শেষ মুহূর্তে রঙ তুলির আঁচড়ে প্রতিমার সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন ভোলার প্রতিমা শিল্পীরা।

চলতি বছর ভোলা জেলায় ১০৬টি পূজামণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এর মধ্যে ভোলা সদরে ২৭টি, বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ২০টি, দৌলতখানে উপজেলায় ৮টি, লালমোহন উপজেলায় ১৬টি, তজুমদ্দিন উপজেলায় ১৫টি, চরফ্যাশনে ৯টি ও মনপুরা উপজেলায় ১১টি পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ১১টি মণ্ডপ কমেছে। এছাড়া প্রতিমা কারিগরিদের পারিশ্রমিকও কমেছে বলে জানিয়েছেন অনেকে। 

সরেজমিনে ভোলার মিহির লাল সাহার মাঠ, শতদল বিকাশ, মদন মোহন জিওর মন্দিরসহ বেশ কয়েকটি পূজা মন্ডপ ঘুরে দেখা যায়, প্রতিমা তৈরির কাজ ইতিমধ্যে সম্পূর্ণ করেছেন প্রতিমা কারিগরিরা। তাই প্রতিমা কারিগরিরা শেষ মুহূর্তে ব্যস্ত সময় পার করছেন দেবী দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতীর প্রতিমাকে রঙ তুলির আচড়ে সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলতে। আগামী ৮ তারিখের মধ্যে রঙের কাজ শেষ করার আশা প্রতিমা শিল্পীদের। 

ফরিদপুর থেকে ভোলায় আসা প্রতিমা কারিগরি নিমাই পাপ বলেন, আমাদের ভোলায় এ বছর ৮ দুর্গা প্রতিমা তৈরি করেছি, সবগুলোর কাজ শেষ হয়েছে। এখন রঙের কাজ চলছে। তবে প্রয়োজনীয় সামগ্রীর বাজার মূল্যের হিসেবে এ বছর আমাদের কাজের পারিশ্রমিক কম। তবুও হাসিমুখে দেবীকে সাজাচ্ছি।

মাগুরার অনিল পাল বলেন, দীর্ঘ ৫৫ বছর ধরে দুর্গা, গনেশসহ বিভিন্ন প্রতিমা তৈরির কাজ করি। এখন আর আগের মতো লাভ থাকে না। খরচাপাতি শেষে নিজেদের পকেটে কিছুই থাকে না। আয় কম হলেও কি আর করার। এ কাজ ছাড়া তো আর কোনো কাজ পারি না, তাই করে যাচ্ছি। 

ভোলা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক অসীম কুমার সাহা বলেন, এ বছর ভোলার সাত উপজেলা ১০৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। বর্তমানে মণ্ডপগুলোতে প্রতিমা রং ও পেন্ডেল এবং আলোকসজ্জার কাজ চলমান রয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরার আওতায় থাকবে বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে ভোলা জেলার পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শরীফুল হক বলেন, আগামী ৯ তারিখ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হবে। বরাবরের মতো বাংলাদেশ পুলিশ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা যেন নির্বিঘ্নে আনন্দঘন পরিবেশের মধ্য দিয়ে তাদের পূজা উদযাপন করতে পারে সেজন্য আমাদের সব রকমের ব্যবস্থা আছে। গোয়েন্দা তৎপরতাসহ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। এছাড়া প্রতিটি পূজা মণ্ডপ সিসিটিভির আওতায় থাকবে।  

পুলিশ সুপার আরও বলেন, ভোলা জেলার সবকটি পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভা করেছি। তারা তাদের মতো করে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রাখবেন বলে আমাকে জানিয়েছেন, স্বেচ্ছাসেবকদের চিহ্নিতকরণ পোশাক রাখার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। এছাড়া শৃঙ্খলা রক্ষায় নারী ও পুরুষ দর্শনার্থীদের জন্য আলাদা আলাদা প্রবেশ পথ ও বের হওয়ার পথ রাখার ও পরামর্শ দিয়েছি।

আরকে