ইমামের রাজকীয় বিদায়ে কাঁদলেন গ্রামবাসী
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার শিকারীকান্দি বায়তুল আমান জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেককে নানা আয়োজন ও সংবর্ধনার মধ্য দিয়ে রাজকীয় বিদায় দিয়েছেন এলাকাবাসী।
৪৪ বছর ইমামতি করার পর মুসল্লিদের এমন ভালোবাসায় খুশিতে কেঁদে ফেলেন তিনি। মতলব উত্তরের ইতিহাসে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় এই প্রথম বলেও জানান স্থানীয় বাসিন্দারা।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের শিকারীকন্দি গ্রামে সকাল থেকেই ইমামকে বিদায় দেওয়ার নানা আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন এলাকাবাসী। সাজানো হয় ঘোড়ার গাড়ি। আয়োজন করা হয় মুসল্লিদের খাবার। সকালে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের পরে জামে মসজিদের ৭৪ বছর বয়সী ইমামকে হাত ধরে ঘোড়ার গাড়িতে তোলেন এলাকাবাসী।
ঘোড়ার গাড়িতে ওঠার আগে শেষবারের মতো উপস্থিত মুসল্লি ও এলাকাবাসীর কাছে নিজের ভুল ত্রুটির জন্য ক্ষমা চান তিনি। পরে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দিয়ে ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে কচুয়ায় উপজেলায় তার নিজ বাড়িতে তাকে নিয়ে যান এলাকাবাসী।
এর আগে সকালে মসজিদের বিদায়ী ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেকের হাতে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে নগদ টাকা তুলে দেন মুসল্লিরা। এ ছাড়াও শত শত মুসল্লির উপস্থিতে ঘোড়ার গাড়িতে ওঠানো হয় ইমামকে। সামনে-পেছনে মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে বিভিন্ন স্লোগানে ইমামের নিজ বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসা হয়।
বিদায়ী ইমাম মাওলানা আব্দুল খালেক বলেন, ১৯৮০ সাল থেকে এই মসজিদে ইমামতি করে আসছি। ৪৪ বছরের বিদায় বেলায় এত ভালোবাসা ও সম্মান দেওয়ায় আমি সত্যিই মুগ্ধ। এমন আয়োজন প্রতিটি মসজিদে করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
মসজিদ কমিটির কোষাধক্ষ্য মো. সেলিম বলেন, মতলব উত্তরে ইমামের এমন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা এই প্রথম। এর আগে কখনো উপজেলায় এমনভাবে কোনো ইমামকে বিদায় দেওয়া হয়নি।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আলহাজ শেখ নজরুল ইসলাম বলেন, আজকের দিনটি আমাদের জন্য বেদনার। কেননা আত্মার আত্মীয়কে বিদায় দিচ্ছি, যিনি দীর্ঘ ৪৪ বছর দ্বিনি শিক্ষায় আমাদের আলোকিত করেছেন।
আনোয়ারুল হক/এএমকে