টানা বৃষ্টি ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ঝিনাইগাতী ও শ্রীবরদী উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে। নালিতাবাড়ী ও ঝিনাইগাতী উপজেলা সদরের পানি কিছুটা নেমে গেলেও নিম্নাঞ্চলের অন্তত দেড়শ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

আকস্মিক এ বন্যায় গতকাল শুক্রবার (৪ অক্টোবর) নালিতাবাড়ীতে বৃদ্ধ ও নারীসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া রাতে ঝিনাইগাতীতে পাহাড়ি ঢলের সঙ্গে উজান থেকে ভেসে এসেছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর এক ব্যক্তির মরদেহ। তবে এখন পর্যন্ত তার পরিচয় শনাক্ত করা যায়নি।

ঝিনাইগাতী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আল আমীন বলেন, পাহাড় থেকে ভেসে আসা মরদেহটি দুর্গম এলাকার। গতকাল রাতে ওটা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি, আমাদের ফোর্স মরদেহ উদ্ধারের জন্য সকালে রওনা হয়েছে।

এদিকে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হওয়ায় পানিবন্দি মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। তিন উপজেলায় এখনো অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আমন আবাদ, মাছের ঘের ও সবজি আবাদ। 

ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীর মহারশি ও ভোগাই নদীর অন্তত ১০ জায়গায় বাঁধ ভেঙে ও পাড় উপচে প্লাবিত গ্রামের বিভিন্ন রাস্তাঘাট ও আবাদ তলিয়ে গেছে। জেলার অন্তত ২০ হাজার হেক্টর আমন আবাদ এবং এক হাজার হেক্টর সবজির আবাদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এতে অন্তত ৬৫ হাজার ৪শ কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এদিকে গতকাল রাতে বন্যাকবলিত বেশ কিছু এলাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে।

শেরপুর জেলার তিনটি উপজেলার অসংখ্য মাছের ঘের ভেসে গেছে। শেরপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকার বলেন, আমরা তিনটি উপজেলার তথ্য সংগ্রহ করছি। সঠিক হিসাব আগামীকালকের মধ্যে দেওয়া হবে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, জেলার তিনটি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধারে ও শুকনো খাবার পৌঁছে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। নতুন নতুন এলাকায় প্লাবিত হচ্ছে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। 

নাইমুর/আরকে