সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ, গোবিন্দগঞ্জের সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল ও গোবিন্দগঞ্জের সাবেক পৌর মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি

গাইবান্ধা-৪ আসনের (গোবিন্দগঞ্জ) সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদসহ (৬৮) ৪৯ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০-২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান মামলার বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী মো. মামুন খান (২৭) গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামুন গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের বুজরুক বোয়ালিয়া হীরকপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে। গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমানকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিরা হলেন- গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুল (৪০), উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক প্রধান আতাউর রহমান বাবলু (৬২), সাবেক মেয়র মুকিতুর রহমান রাফি (৪৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিয়া আসাদুজ্জামান হিরু (৪৫), উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক ফরহাদ আকন্দ (৩৪), কামারদহ ইউপি চেয়ারম্যান তৌকির হাসান রচিসহ (৩৭) ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের আরও বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বাদী মামুন খান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। সারা দেশের মতো গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জেও কোটা সংস্কার আন্দোলনের ডাকে আন্দোলনকারীরা একত্রিত হয়েছিলেন। গত ১৭ জুলাই বিকেল ৪টার দিকে গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার সাফিয়া আছাব বিপিএড কলেজ মাঠ থেকে প্রায় ৭০০-৮০০ জন শিক্ষার্থী ও জনতা একটি প্রতিবাদ মিছিল নিয়ে শহরের ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় হামলার ঘটনা ঘটে। রাজমতি সুপার মার্কেটের সামনে পূর্বপরিকল্পিতভাবে আসামিরা লাঠি, লোহার রড, দেশীয় অস্ত্র, রামদা, চাইনিজ কুড়াল, হকিস্টিক, এবং ইট-পাথর নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়।

সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নির্দেশে এবং সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাকিল আকন্দ বুলবুলের নেতৃত্বে আসামিরা হামলা করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ সময় মামুন খান, বাঁধন, ওয়ারিদ, শ্রাবণ, আকাশ, ওমর ফারুক, আবিদ হোসেন, ইজাজসহ ২০-২৫ জনকে আঘাত করা হয়। হামলায় ৪০-৪২ জন আন্দোলনকারী গুরুতর আহত হন। আসামিরা আন্দোলনকারীদের থেকে কয়েকটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয় এবং তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেয়।

গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আ.ফ.ম. আছাদুজ্জামান জানান, একজন শিক্ষার্থী বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ এবং ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেছেন। মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে (মামলা নং ৭/৩৬১, তারিখ ৩/১০/২০২৪)।

ওসি আরও জানান, আসামিরা কেউই এলাকায় নেই। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

রিপন আকন্দ/এমজেইউ